প্রায় সাত মাস ধরে মানবেতর জীবন পার করছেন গাজার মানুষ। প্রতিনিয়তই প্রাণের ভয় তাড়া করছে। যারা কোন ভাবে বেঁচে থাকছেন, তাদের কেবল ছোটাছুটি। একটু নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ। কিন্তু কোথায় যাবেন?
গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলা বন্ধ হওয়ার কোনো লক্ষণই নেই। প্রতিদিনই নিরীহ ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যা করছে ইসরাইল। গোটা উপত্যকাই এখন মৃত্যুর উপত্যকায় পরিণত হয়েছে।
যুদ্ধের শুরুর দিকে ইসরাইলি হায়েনাদের নির্বিচারে বিমান ও স্থল হামলা থেকে প্রাণে বাঁচতে গাজার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মিসরের সীমান্ত এলাকা রাফাহতে পালিয়ে আসে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা।
তবে এত দিন রাফাহ শহরকে ফিলিস্তিনিদের জন্য নিরাপদ মনে করা হলেও ক্রমেই সেখানকার পরিবেশ হয়ে উঠছে ভয়াবহ। রাফাহতে শরণার্থী শিবিরগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী।
এতে নতুন করে রাফাহতে একই পরিবারের দুই শিশু নিহত হয়েছেন। আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা-বাবাও জানেন না, তাদের দুই সন্তানেরা এই পৃথিবীতে আর নেই।
স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতালটির পরিবেশ। অবুঝ দুই শিশুর শেষ বিদায় জানাতে সেখানে জড়ো হয়েছে স্বজনেরা। কোন কিছুতেই তারা সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছেন না।
চার বছরের করিম এবং আর দুই বছরের মোনার এই মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছেন না তারা। এই নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের বিচার চাওয়ারও সামর্থ্য নেই তাদের।
নিহত দুই শিশুর চাচা রামি আবু শানব বলেন, হঠাৎই শুনলাম আমরা ভাতিজারা আর নেই। ওদের বাবা-মায়ের অবস্থাও সংকটজনক। তারা এখন হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি।
তিনি আরও বলেন, এই শিশুগুলোর কি এটাই প্রাপ্য ছিল। আমরা গাজা যুদ্ধের অষ্টম মাসে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত এই যুদ্ধে ১৫ হাজারের বেশি শিশুকে লক্ষ্যবস্তু করেছে ইসরাইলি বাহিনী।
গাজার রাফাহ শহরে বর্তমানে প্রায় ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে। তাই অসুখ, দুর্ভিক্ষ, গণকবরের সাথে ইসরাইলের নতুন করে শুরু হওয়া স্থল অভিযান নিরীহ ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও দুর্বিষহ হয়ে দাঁড়িয়েছে।