পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে কারাবন্দী করার পরও শান্তিতে নেই শাহবাজ সরকার। বিভিন্ন মামলায় জামিন পেলেও ইমরানকে মুক্তি দিতে টালবাহানা করছে পাকিস্তানের সরকার। এতে করে বেড়েই চলছে তেহরিক ই ইনসাফ- পিটিআই নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ ও সরকারবিরোধী সব পক্ষের বিক্ষোভ।
যে কোন মূল্যে প্রিয় নেতাকে মুক্ত করার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে পাকিস্তানের বিরোধীরা। পিটিআই বলছে, ইমরানকে আইনিভাবে মুক্তি না দেয়া হলে জেলের তালা ভেঙে ছিনিয়ে আনবেন তারা। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তি দিতে পাকিস্তান সরকারকে সর্বোচ্চ এক থেকে দুই সপ্তাহের আল্টিমেটাম দিয়েছে দলটি।
ক্ষমতাচ্যুত হবার পর ২০২৩ সালের মে মাসে পিটিআইয়ের এক সমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছিল পাকিস্তানজুড়ে। এ সময় দেশটির বেশ কয়েকটি সামরিক স্থাপনাতেও হামলা হয়। এসব হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত আগস্টে গ্রেপ্তার হবার পর থেকেই জেলবন্দি ইমরান।
তবে, সম্প্রতি পাকিস্তানের ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স- আইএসআইয়ের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ফাইজ হামিদকে গ্রেপ্তারের পর ধারণা করা হয় সামরিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা হবে ইমরানকে। এই বিষয়ে ইঙ্গিতও দেন দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ।
এরপরই কোর্ট মার্শাল এড়াতে ইসলামাবাদ আদালতে পিটিশন দায়ের করেন ইমরান খান। আদালত এই পিটিশনের বৈধতা নিয়ে সংশয় প্রকাশের পর থেকেই সামরিক আদালতে বিচারের শঙ্কা আরও দৃঢ় হচ্ছে। আর এসব নিয়ে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পাকিস্তানের রাজনীতি।
এ পরিস্থিতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। রবিবার ইসলামাবাদে বড় জমায়েতের মাধ্যমে শাহবাজ শরিফের সরকারকে নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন করে ইমরানের দল পিটিআই। দলটির নেতা ও খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর বলেন, সরকার আইনিভাবে মুক্তি না দিলে নিজেরাই কারাগার ভেঙে ইমরানকে বের করে আনবে পিটিআই কর্মীরা।
তিনি আরও বলেন, এই কর্মসূচিতে প্রথম ব্যক্তি হবেন তিনি। দলের এমন উদ্যোগে সরকার বাধা দিলে বা গুলি চালালে তিনিই প্রথম বুলেট বুক পেতে নেবেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। ইমরানকে মিথ্যা মামলাগুলো থেকে অব্যহতি না দিলে সরকার জনসমুদ্রে ভেসে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন নেতারা।
রবিবার পিটিআইয়ের এই সমাবেশকে ঘিরে নজিরবিহীন নিরাপত্তা নেয়া হয় ইসলামাবাদজুড়ে। তবে রোড ব্লক, হয়রানি উপেক্ষা করেই সমাবেশস্থল সঙজানিতে জড়ো হতে থাকেন কর্মীরা। ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে এর আগেও সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েও পায়নি- পিটিআই।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মুক্ত করতে পাঞ্জাবে নতুন কর্মসূচিও শুরু করছে দলটি। মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শাসিত প্রদশেটিতে ইমরানকে মুক্তির এই কর্মসূচি সফল করতে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন তিনি। কর্মসূচি সফলে খাইবার পাখতুনখাওয়া থেকে ৫০ হাজার কর্মী পাঞ্জাবে জড়ো হন।
তবে সন্ধ্যার পরেই পিটিআই কর্মীদের উপর লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হন পিটিআইয়ের অনেক কর্মী। এছাড়াও ইসলামাবাদে পিটিআইয়ের সমাবেশস্থলের কিছুটা দূরেই বিস্ফোরক উদ্ধারের কথা জানায় পুলিশ। পাশাপাশি সমাবেশ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি সরকারপক্ষও ।