স্পেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ ভ্যালেন্সিয়ায় আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ হয়। মঙ্গলবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বুধবার প্রদেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয় বলে জানিয়েছে ভ্যালেন্সিয়ার প্রাদেশিক সরকার।
রয়টার্স ও বিবিসি জানিয়েছে, মঙ্গলবার মুষলধারে বৃষ্টির জেরে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। ভেসে যায় বিভিন্ন সেতু, সড়ক, ভবন। পানির তোড় থেকে বাঁচতে অনেক মানুষকে বাড়ির ছাদে উঠতে কিংবা গাছ আঁকড়ে ধরতে দেখা গেছে। শুধু ভ্যালেন্সিয়া প্রদেশেই ৯২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ভ্যালেন্সিয়ার গভর্নর জানান, বন্যার কারণে প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং সে এলাকাগুলোতে বসবাসরত লোকজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে, পূর্বাঞ্চলের ভ্যালেন্সিয়ায় লাল এবং দক্ষিণের আন্দালুসিয়ার কিছু অংশেও সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়।
বন্যার কারণে রাজধানী মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনার বিভিন্ন শহরে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে এছাড়া স্কুল এবং অফিস-আদালত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বন্যায় পূর্ব উপকূল এবং মাদ্রিদ ও ভ্যালেন্সিয়ার মধ্যবর্তী প্রধান মহাসড়কসহ ৬০টিরও বেশি সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে।
আকস্মিক বন্যায় মালাগার কাছে প্রায় ৩০০ যাত্রী নিয়ে একটি দ্রুতগামী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও ভ্যালেন্সিয়া শহর এবং মাদ্রিদের মধ্যে উচ্চ গতির ট্রেন পরিষেবা বাধাগ্রস্ত হয়।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বন্যায় হতাহতের জন্য দেশটিতে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন। বন্যায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সম্মানে গতকাল বুধবার দেশটির পার্লামেন্টে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বলা হচ্ছে, ১৯৭৩ সালের পর এবারই সবচেয়ে প্রাণঘাতী বন্যার মুখোমুখি হয়েছে স্পেন। এর আগে ১৯৭৩ সালে এক বন্যায় দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অন্তত ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।