উড়ান চলাচলের ইতিহাসে সবচেয়ে রহস্যময় ঘটনা হয়ে আছে, দশ বছর আগে মালয়শিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী ফ্লাইটের হাওয়া হয়ে যাওয়া। বিশ্বের কোন প্রযুক্তি এখন পর্যন্ত নিখোঁজ সেই উড়োজাহাজের কোন খোঁজ দিতে পারেনি। তবে হাল ছাড়তে নারাজ মালয়শিয়ার সরকার।
২০১৪ সালে নিখোঁজ হওয়া যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের অনুসন্ধান আবার শুরু করতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। শুক্রবার মালয়েশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী অ্যান্থনি লোক জানান, মন্ত্রিসভা ফ্লাইটটি খুঁজে পেতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামুদ্রিক অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠান ‘ওশেন ইনফিনিটি’ এর সঙ্গে সাত কোটি ডলারের চুক্তি অনুমোদন করেছে।
২০১৪ সালের ৮ মার্চ কুয়ালালামপুর থেকে চীনের রাজধানী বেইজিং যাবার পথে ২৩৯ যাত্রীসহ এমএইচ-৩৭০ ফ্লাইট নিখোঁজ হয়ে যায়। এরপর বিশ্ব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আর বিস্তৃত অনুসন্ধান অভিযানেও নিঁখোজ সেই ফ্লাইটটির কোন খোঁজ মেলেনি, এমনকি ধ্বংসাবশেষও মেলেনি।
স্যাটেলাইট তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, উড়োজাহাজটি সম্ভবত ভারত মহাসাগরের দক্ষিণাঞ্চলে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলের কাছাকাছি কোথাও বিধ্বস্ত হয়েছে। কিন্তু দুইবার বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়ে উড়োজাহাজটির খোঁজে তল্লাশি চালানো হলেও উল্লেখ করার মতো কিছু পাওয়া যায়নি।
গত ১০ বছর ধরে বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা চলছে, তবে এখনো সন্ধান মেলেনি সেটির। উড়ানটি খুঁজে পেতে ওশান ইনফিনিটির সঙ্গে মালয় সরকার যে চুক্তি করেছে, সেটি বেশ অভিনব। উড়ানটি খুঁজে পেলেই প্রতিষ্ঠানটিকে অর্থ দেয়া হবে, এমন শর্ত রেখেই চুক্তিতে রাজি হয়েছে মালয়শিয়া সরকার।
২০১৮ সালেও ওশান ইনফিনিটির একই শর্তে অনুসন্ধান চালানো হলে তিন মাস পর তা ব্যর্থ হয়। এর আগে ১৫ কোটি ডলার ব্যয়ে একটি বহুজাতিক প্রচেষ্টা দুই বছর ধরে বিশাল জলরাশিতে অনুসন্ধান চালানোর পর ২০১৭ সালে শেষ হয়। সেই ওশান ইনফিনিটিই আবারও নতুন করে প্রস্তাব দিয়েছে কুয়ালামপুরকে।
নতুন অনুসন্ধানটি ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ অংশের ১৫ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে পরিচালিত হবে। নতুন কিছু তথ্যকে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে অনুসন্ধানের জন্য সরকার এই অঞ্চল বেছে নিয়েছে। অ্যান্থনি লোক বলেন, আমরা আশা করি, এবার ফলাফল ইতিবাচক হবে। ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেলে পরিবারগুলোর জন্য এটি কিছুটা হলেও শান্তি বয়ে আনবে।