কাবুল দখল করে আশরাফ ঘানি প্রশাসনের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়ার পর তালেবান এখন ব্যস্ত সময় পার করছে আফগানিস্তান শাসনের রূপরেখা ও পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কাজে।
প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সেখান থেকে বের করে দেয়া হয়েছে আগের প্রশাসনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারিকে। সেসব চেয়ার টেবিলে বসতে শুরু করেছে তালেবান কর্মীরা।
প্রায় ২০ বছর পর আবারো আফগান শাসনে ফিরলেও, তালেবান ভালো করেই জানে, তাদের আসল পরীক্ষা সবে শুরু। বিশাল জনগোষ্ঠির দুই বেলার আহার নিশ্চিত করতে হবে তাদের।
শুধু খাদ্যই নয়, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, বিনোদন থেকে শুরু করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার গুরু দায়িত্ব তালেবানের সামনে।
কাজটা যে সহজ হবে না, সেটি ভালো করেই জানে তারা। গোট বিশ্ব থেকে খুব বেশি সাহায্য ও সহায়তা তারা পাবে না। দাতা গোষ্ঠি তো এরিমধ্যে হাত গুটিয়ে নিয়েছে।
তাহলে কি করে সামাল দেবে সব, কোথা থেকে টাকা পাবে তালেবান। এসব প্রশ্ন যখন সামনে আসছে তখন চমকে দেয়ার মতো তথ্য দিয়েছে ফোর্বস সাময়িকী।
আরও পড়ুন: রাতে পদ্মায় যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
ফোবর্সের এক পরিসংখ্যান বলছে, মোটেও গরীব সংগঠন নয় তালেবান। আফগানিস্তান শাসন করার জন্য প্রাথমিক টাকা-পায়সার অভাব হবে না তাদের।
কারণ, বছরে নাকি প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হাতে আসে তাদের। ফলে তালেবানের কোষাগারে বিলিয়ন ডলার থাকলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না।
২০১৬ সালে তালেবানের অর্থভাণ্ডার নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিলো ফোর্বস। সেখানেই উঠে আসে চমকপ্রদ বেশ কয়েকটি তথ্য। জানা যায় তালেবানের আয়ের উৎস।
সাধারণভাবে ধারণা করা হতো, তালেবান চলে মাদক বিক্রি আর চোরাচালানের টাকায়। কিন্তু, আর যাই হোক এসব অর্থে এতো বড় সংগঠন চলে না, সেটা জানেন অর্থনীতিবিদেরা।
ফোর্বসের সেই সমীক্ষা জানাচ্ছে, বিশ্বের ১০টি জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে সম্পদশালী হিসেবে তালেবানের স্থান পঞ্চম। শীর্ষে রয়েছে আইএস।
মধ্যপ্রাচ্যে ইরাক-সিরিয়াভিক্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস’র বার্ষিক আয় দুই বিলিয়ন ডলার। আর তালেবানের বার্ষিক আয় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের আশেপাশে।
কমপক্ষে ছয়টি খাত থেকে টাকা আসে তালেবানের অর্থভান্ডারে। বিদেশি বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া নগদ সহায়তা, চোরাচালান, খনন কাজ, আবাসন, রপ্তানি ও রাজস্ব আদায়, এই ছয়টি খাত থেকে টাকা পায় তালেবান। সবচেয়ে বেশি আসে খনন কাজ ও মাদক পাচার থেকে।
প্রতি বছর অর্থভান্ডার ফুলেফেঁপে উঠায় বদলে গেছে তালেবানের জীবন-যাপনও। পুরনো অস্ত্রের বদলে তাদের কাছে ঝকঝকে পশ্চিমা অস্ত্র। পরছে নতুন পোশাক। অভাব নেই খাদ্যেরও।
একাত্তর/আরএইচ