আফগানিস্তানে বদলে যাওয়া দৃশ্যপট মেনে নিতে পারছেন না দেশটির অনেক নাগরিক। বিশেষ করে তালেবানের হাতে কাবুল পতনের পর, দেশটিতে যে চরম নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে তা নিয়ে গোটা বিশ্বেই উদ্বেগ বাড়ছে। এরমধ্যে সবচেয়ে আতঙ্কে আছেন দেশটির নারীরা।
এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তান থেকে পশ্চিমা বিশ্বের হাত-পা গুটিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে মেনে নিতে পারছেন আফগান চিত্র পরিচালক সাহরা করিমি।
রোববার (১৬ আগস্ট) এই টুইট বার্তায় আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পরিস্থিতি বর্ণনা করে সাহরা লেখেন, ‘তালেবান আমাদেরকে হত্যা করতে এগিয়ে আসছে। বিশ্বের তাবৎ বড় শক্তির দেশগুলোর জনগণকে বলছি, দয়া করে চুপ করে থাকবেন না’।
তিনি আরো জানান, ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়েও তা পারেননি। কারণ নারী বলে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন, সেখানে কি ঘটে গেছে, কি ঘটতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: কাবুল বিমানবন্দরে আতঙ্ক, ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ
তিন দিন আগে, আরেক টুইটে এই চলচ্চিত্র পরিচালক গোটা সিনেমা বিশ্বের কাছে একটি খোলা চিঠি লেখেন। সেখানে তিনি সবিস্তারে বর্ণনা করে আর দেশে কি হতে যাচ্ছে।
আফগান ফিল্ম অর্গানাইজেশনের প্রথম মহিলা চেয়ারপার্সন সাহরা লেখেন, ‘আমাদের সুন্দর দেশকে, দেশের মানুষকে এবং শিল্প সচেতন মানুষকে তালেবানের হাত থেকে বাঁচান’।
চিঠিতে তিনি জানান, গত কয়েক সপ্তাহে একাধিক প্রদেশে শত শিশুকে অপহরণ করা হয়েছে। বিয়ের বাজারে ছোট ছোট মেয়েদের বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।
তালেবানের হাতে আফগানিস্তান নিরাপদ নয় উল্লেখ করে সাহরা আরো লেখেন, ‘আফগানিস্তানে মানবাধিকার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অথচ চুপ গোটা বিশ্ব। এভাবে আমাদের একা ফেলে চলে যাওয়া অন্যায়। গত ২০ বছরে যা কিছু অর্জন করেছি, সব ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে। আমি এবং আমার মতো শিল্প সচেতন মানুষ এখন ওদের হিটলিস্টে’।
আরও পড়ুন: তালেবানের বছরে আয় ৪০০ মিলিয়ন ডলার!
এরিমধ্যে ২০ লক্ষ মেয়েকে স্কুল ছাড়তে বাধ্য করেছে তালেবান। ফলে সামনের সময়ে দেশটির ৯০ লাখ মেয়ে শিক্ষার্থীর জীবন বিপন্ন উল্লেখ করে সাহরা করিম আরো জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে আফগানিস্তানের স্কুলে মেয়েদের উপস্থিতি অনেক বেড়েছে।
বিশেষ করে হেরাথ প্রদেশের স্কুলগুলোতে ৫০ ভাগই মেয়ে। এমন শত শত অর্জন ধুলায় মিশে যাবে বলেও চিঠিতে আশঙ্কা জানান সাহরা করিম।
তিনি আরো বলেন, লড়াইয়ের জন্য তিনি প্রস্তুত। কিন্তু তার একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই এই লড়াইয়ে সবাইকে পাশে চেয়েছেন এই চিত্র পরিচালক।
একাত্তর/এসজে