তালেবানদের দখলে থাকা আফগানিস্তানের নতুন সরকার কাঠামোয় নারীদের যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ২০ বছর পর ক্ষমতার কেন্দ্রে আসা গোষ্ঠীটি। একইসঙ্গে দেশজুড়ে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে তালেবান।
তালেবান আতঙ্কে সাধারণ আফগান নাগরিকদের দেশ ছাড়ার হিড়িকের মধ্যে মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) এই ঘোষণা দেওয়া হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি।
এপি'র প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আফগান সরকার কাঠামোয় নারীদের অংশগ্রহণের বিষয়ে মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) এই ঘোষণা দেন তালেবানের সাংস্কৃতিক কমিশনের সদস্য এনামুল্লাহ সামানগনি।
এদিকে রাজধানী কাবুল দখলের পর দুই দিনের ভেতরেই তালেবানের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর গোষ্ঠীটির যোদ্ধারা সেখানকার কারাগার খালি করে দিয়েছে এবং সরকারি অস্ত্রাগার লুট করেছে। আর এই খবরে আতঙ্কে বাড়ির মধ্যেই অবস্থান করছেন কাবুলের অধিকাংশ বাসিন্দা।
এপি'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, তালেবান নেতা সামানগনি জানিয়েছেন, ‘ইসলামিক আমিরাত চায় না নারীরা পিছিয়ে থাকুক। আর তাই শরীয়াহ আইন মেনেই নারীদেরকে আফগান সরকারের অংশ করা হবে।’ প্রসঙ্গত, তালেবান আফগানিস্তানকে ‘ইসলামিক আমিরাত’ নামে অভিহিত করে।
সামানগনি আরও বলেন, ‘সরকারের কাঠামো কেমন হবে, সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। তবে অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে পুরোপুরি ইসলামিক নেতৃত্বই এই সরকারের কেন্দ্রে থাকবে এবং সকল পক্ষই সেখানে যুক্ত থাকবে।’ ‘আমাদের জনগণ মুসলিম এবং তাদেরকে ইসলামের বিষয়গুলোতে জোর করতে আমরা এখানে আসিনি।’
এর আগে, জুলাইয়ের শুরুতে তালেবান বাহিনী যখন আফগানিস্তানের বিভিন্ন অংশের দখল নিচ্ছিল, তখন একদল যোদ্ধা দেশটির দক্ষিণের শহর কান্দাহারে অবস্থিত আজিজি ব্যাংক ভবনে ঢুকে সেখানে কর্মরত নয় জন নারী কর্মীকে বের হয়ে যেতে বলেন।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা করল তালেবান
ব্যাংকটির ম্যানেজার ও তিন জন নারী কর্মীর বরাতে জানা গেছে, অস্ত্রধারী যোদ্ধারা তাদেরকে নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেয় এবং তাদেরকে অফিসে ফিরে যেতে নিষেধ করে। তালেবানদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিবারের পুরুষ সদস্যরা নারী কর্মীদের বদলে কাজে যোগ দিতে পারবেন।
তালেবানদের সর্বশেষ শাসনামলে (১৯৯৬-২০০১), নারীদের কাজ করার ও মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। কোনো কারণে নরীদের বাসা থেকে বের হতে হলে সঙ্গে একজন পুরুষ আত্মীয়কে নিয়ে যেতে হতো।
এই আইন না মানলে তাদেরকে জনসম্মুখে অপমান করা হতো। তালেবানদের ধর্মীয় পুলিশ শাস্তি হিসেবে তাদেরকে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করতেন।
একাত্তর/এসএ