রাশিয়ার ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে, মঙ্গলবার রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বিশেষ হটলাইন টেলিফোনে কথা বলবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সমঝোতার এই আবহেই দুই দেশই, একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তু নিশানা করে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
সোমবার রাত থেকে পূর্ব রাশিয়ার বিভিন্ন অংশে ধারাবাহিক ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন সেনাবাহিনী। তবে, একরাতে ইউক্রেনের ৭২টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এর মধ্যে বেশিরভাগ ড্রোন বেলগোরোদ অঞ্চলের আকাশে ধ্বংস করা হয়েছে।
ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার আস্ত্রাখানে একটি তেল শোধনাগারে আগুন লেগে গেছে। ধ্বংস হয়েছে বেশ কিছু ঘরবাড়ি। মঙ্গলবার আস্ত্রাখানের গভর্নর ইগর বাবুশকিন একথা জানিয়েছেন। রুশ সেনা জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা মোট ৭২টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে ৩৬টি কুরস্ক অঞ্চলে। বাকিগুলো আস্ত্রাখানে। অন্যদিকে, ইউক্রেন সেনার দাবি তারা সোমবার থেকে ৯০টি রুশ ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে।
টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ৪১টি ড্রোন বেলগোরোদ অঞ্চলের আকাশে ধ্বংস করা হয়েছে, বাকিগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে ব্রিয়ানস্ক, কুরস্ক ও ওরিওল অঞ্চলে। বেলগোরোদের গভর্নর ভ্যাচেস্লাভ গ্লাদকভ জানিয়েছেন, এই হামলায় একজন আহত হয়েছেন এবং কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ব্রিয়ানস্কের গভর্নর আলেকজান্ডার বোগোমাজ বলেছেন, তার এলাকায় হামলার ফলে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। কোনো অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির খবরও পাওয়া যায়নি। এই হামলা নিয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
কিয়েভ আগে থেকেই বলে আসছে, রাশিয়ার অভ্যন্তরে তাদের হামলার লক্ষ্য হচ্ছে যুদ্ধের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাঠামো ধ্বংস করা। তাদের দাবি, এই হামলাগুলো মূলত মস্কোর যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে দুর্বল করার জন্য চালানো হচ্ছে এবং রাশিয়ার টানা বোমা হামলার জবাব হিসেবেই ইউক্রেন এসব চালিয়ে যাচ্ছে।
রাজধানী কিয়েভের পাশাপাশি জাপোরিজিয়া, ওডেসার মতো শহরেও রুশ ড্রোন অসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করছে কিয়েভ। যুদ্ধবিরতির আগে দরকষাকষিতে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার উদ্দেশ্যেই শেষবেলায় যুযুধান দু’পক্ষ হামলার অভিঘাত বাড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহে সৌদি আরবের জেদ্দায় আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বৈঠকের পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ৩০ দিনের যু্দ্ধবিরতিতে রাজি হন। এই পরিস্থিতিতে তিন বছরের রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে সাময়িক বিরতি হবে কি না, তা নির্ভর করছে মঙ্গলবার ট্রাম্প-পুতিন টেলিফোন-কথোপকথনের উপর।