কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি বাতিল করার পর, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ইসলামাবাদ যে কোনও মূল্যে পানির অধিকার রক্ষা করবে। তবে এরিমধ্যে কোন রকম পূর্ব সংকেত ছাড়াই ভারত সিন্ধু নদের উপনদী ঝিলমের পানি ছেড়ে দেওয়ায় কাশ্মীরের পাকিস্তান অংশে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইসলামাবাদ।
এদিকে, শনিবার মধ্যরাতে টানা তৃতীয় দিনের মতো কাশ্মীরের ভারত-পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখায় গোলাগুলি বিনিময় করেছে দুই দেশের সেনারা। আর পেহেলগাম হামলার দায় শুরুতে স্বীকার করলেও, এখন ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করছে কাশ্মীরের বিদ্রোহী গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)।
পাকিস্তানকে কোনো ধরনের পূর্ব সংকেত না দিয়েই আসাদ কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদের হাত্তিয়ান বালা এলাকায় ঝিলম নদীতে অতিরিক্ত পানি ছেড়েছে ভারত। এই হঠাৎ পানিপ্রবাহের কারণে মুজাফফরাবাদ প্রশাসন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। আকস্মিক ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
এর আগে পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান যে কোনো মূল্যে নিজেদের পানির অধিকার রক্ষা করবে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে টেলিফোন আলাপে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের পর এবার কাশ্মীরের হামলার স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভিও। কাশ্মীরে হামলা নিয়ে পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক তদন্ত হলে যে কোনো সহযোগিতা করতে প্রস্তুত পাকিস্তান।
ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতাদেশকে ‘শিশুসুলভ ও অবৈধ’ বলে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় জ্বালানি মন্ত্রী সরদার আওয়াইস আহমদ খান লেঘারি। নদীর প্রতিটি ফোঁটা পানির ওপর পাকিস্তানের অধিকার আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনও পক্ষ একতরফাভাবে এটি স্থগিত করতে পারে না।
এদিকে, কাশ্মীর সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখায় বরাবর তৃতীয় দিনের মতো দুই দেশের সেনাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার গভীর রাতে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের তুতমারি গলি ও রামপুর সেক্টরের বিপরীত দিকে দুই পক্ষের সেনাদের মধ্যে এ গোলাগুলি হয়।
এদিকে, পেহেলগামে হামলায় জড়িত সন্দেহে আরও একজনের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতের সেনাবাহিনী। এই নিয়ে ৪৮ ঘণ্টায় ৬ জনের বাড়ি মাটিতে মিশিয়ে দেয়া হলো। এছাড়া সন্দেহভাজনের খোঁজে শনিবার শ্রীনগরে ৬০টিরও বেশি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী।