ইরানের রাজধানী তেহরান এবং এর আশপাশের এলাকায় অবস্থিত পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইল। রাতভর চালানো এই হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি ও রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান জেনারেল হোসেইন সালামিসহ আরও অনেকেই নিহত হয়েছেন। জবাবে দখলদার রাষ্ট্রটিতে পাল্টা হামলা চালিয়েছে তেহরান। শতাধিক ড্রোন ব্যবহার করে এ হামলা চালানো হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, শুক্রবার ইরানের পক্ষ থেকে ১০০টিরও বেশি ড্রোন ইসরাইলের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ড্রোনগুলো ঠিক কোথায় আঘাত হেনেছে বা প্রতিহত করা হয়েছে কিনা, সে বিষয়েও বিস্তারিত জানানো হয়নি।
এদিকে আরও বড় হামলার আশঙ্কায় ইসরাইলজুড়ে ‘বিশেষ জরুরি অবস্থা’ জারি করা হয়েছে। সাইরেন বাজিয়ে জনগণকে সতর্ক করা হয়েছে এবং ভোর ৩টা থেকে “জরুরি কার্যক্রম ছাড়া সবকিছু” বন্ধ রাখার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র অ্যাফি ডেফরিন বলেন, সকল আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে এবং এগুলো হুমকি প্রতিহত করতে কাজ করছে। এটি একেবারে ভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি—আমরা কঠিন সময়ের মুখোমুখি হচ্ছি। তাই আমাদের ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
শুক্রবার ভোরে ইরান আক্রমণের পর জর্ডান সাময়িকভাবে তাদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে। জর্ডানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএআরসি) জানায়, এটি একটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ, যা নেওয়া হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে।
ইসরাইলি বিমান সংস্থা ইসরাইর জানিয়েছে, নিরাপত্তার অংশ হিসেবে তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর থেকে বিমানগুলো সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
হামলার জেরে ইসরাইলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং হোম ফ্রন্ট কমান্ড সকল হাসপাতালকে তাদের পরিষেবা সুরক্ষিত এলাকা এবং ভূগর্ভস্থ সুবিধাগুলোতে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছে।
মন্ত্রণালয় জনসাধারণকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে আসা এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
চিকিৎসা কেন্দ্র এবং স্বাস্থ্য ক্লিনিকগুলি জানিয়েছে যে তারা সমস্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া চিকিৎসা সেবা বাতিল করেছে।
তবে এই পরিস্থিতিতে দুই পক্ষকেই 'সর্বোচ্চ সংযম' বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ প্রধান অ্যান্তেনিও গুতেরেস ।
ইসরাইল ও ইরান উভয় দেশই ইতোমধ্যেই তাদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।