যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো ইরান-ইসরাইল হামলায় জোরালো সমর্থন জানাচ্ছেন, আবার কখনো এই অবস্থান থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। এই দ্বিধাদ্বন্দ্ব তার অবস্থানকে অস্পষ্ট করে তুলেছে। এদিকে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করেই হামলা চালানো হচ্ছে।
প্রশ্ন হল সংঘাত নিয়ে ট্রাম্প এখন কী সমাধান বেছে নেবেন? তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এ বিষয়ে ট্রাম্পের সামনে তিনটি পথ খোলা আছে।
গেল বৃহস্পতিবার ইসরাইল যখন প্রথম তেহরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আরও ভয়ংকর’ হামলা আসবে।
পরে তিনিই বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তিই হলো তার পছন্দের পথ। কিন্তু, সেখানে পৌঁছাতে কখনো শক্তির প্রয়োগের হুমকি দিয়েছেন, কখনো বা জোর দিয়েছেন কূটনীতির দিকে।
দীর্ঘদিন ধরে নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে সামরিক পথ বেছে নেয়ার চাপ দিচ্ছেন। ইসরাইল বিশ্বাস করে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এমন বাঙ্কার ধ্বংসকারী বোমা আছে।
এই মিসাইল দিয়ে ইরানের ফরদোতে অবস্থিত ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ধ্বংস করা যাবে। এদিকে সংঘর্ষ বাড়ার সাথে সাথে রিপাবলিকানদের কাছ থেকে ট্রাম্পের ওপর ইরানের সরকার পরিবর্তনের চাপ বাড়ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প হয়তো এটাও ভাবছেন, ইরান কিছুটা দুর্বল হয়ে গেলে আলোচনায় বসতে বাধ্য হবে। এছাড়া, ইরান-ইসরাইল সংঘাত নিয়ে ট্রাম্পের সামনে যে দ্বিতীয় পথটি খোলা আছে সেটা হলো-মধ্যস্থতা।
ট্রাম্প বারবারই বলেছেন, ইসরাইলের হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত নয়। তবে সংঘাত বাড়লে সেটি ট্রাম্পের জন্য বড় ঝুঁকি নিয়ে আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
নেতানিয়াহু বলছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির ওপর হামলা চালালে সংঘাত বাড়াবে না, বরং শেষ হবে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন যে তিনি এমন হামলার বিপক্ষে।
এদিকে, ট্রাম্পের সামনে যেসব বড় রাজনৈতিক বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছে, তার একটি হলো তার দেশের অভ্যন্তরীণ সমর্থন। কংগ্রেসের বেশিরভাগ রিপাবলিকান সদস্য এখনো ইসরাইলকে জোরালোভাবে সমর্থন করে।
তবে, ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ আন্দোলনে থাকা মানুষ এখন ইসরাইলকে সমর্থন করছেন না। এতে তার ওপর ইসরাইলের আক্রমণাত্মক নীতি থেকে সরে আসার চাপ বাড়ছে। আর ট্রাম্পের কিছু মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে এর ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে।