রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ ঘটবে, তার চেয়ে সেখানকার সিমেন্টসহ অন্য কারখানাগুলো থেকে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কয়েক গুণ বেশি বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
শনিবার (৩০ অক্টোবর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সেখানে যে সিমেন্ট ফ্যাক্টরি আছে, বিস্কুট ফ্যাক্টরি আছে, সেগুলো যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করে, তা রামপালের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি করে। সুতরাং রামপাল নিয়ে হইচই বেশি হয়। আসলে এটা নিয়ে অত দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নথি গায়েব, তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি
অত্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা এই প্রকল্পে (রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র) কার্বন নিঃসরণ অনেক কম। প্রকল্পটি নিয়ে অত দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলেও উল্লেখ করেণ ড. মোমেন।
যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে ঢাকা ছাড়ছেন। প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী ১ ও ২ নভেম্বর যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো এবং ৩ থেকে ৮ তারিখ লন্ডন সফর করবেন। তিনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এরপর নভেম্বরের ৯ থেকে ১৩ তারিখ প্যারিস সফর করবেন।
সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে পশুর নদের তীর ঘেঁষে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড যৌথভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। শুরু থেকেই এটি নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছেন পরিবেশবাদীরা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হওয়ার কথা ছিল। আমরা সেগুলো বাতিল করেছি। পৃথিবীর এটা দেখা উচিত। এতে আমাদের ১২ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নষ্ট হলো। আরও ছয়টি কেন্দ্র যেগুলো প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিল, সেগুলোও নাকচ করে দিয়েছি। পৃথিবীকে বাঁচাতে আমরা এ রকম বড় উদ্যোগ নিয়েছি। অন্যদেরও এটি দেখা উচিত। আমরা চাই অন্যান্য দেশও আমাদের অনুসরণ করবে।
তাহলে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাতিল হলো না কেন- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পটি অত্যন্ত অত্যাধুনিকভাবে তৈরি করা হয়েছে। এর যে ধোঁয়া, এটি ২০০ ফুট ওপরে যায়। পয়েন্ট জিরো টু পারসেন্ট, যেটি অত্যন্ত কম কার্বন নিঃসরণ করবে। ভয়টা হচ্ছে যখন কয়লাটা আনবে, সেটা যদি কোনোভাবে নদীতে পড়ে যায়, তখন দূষণ হতে পারে।
একাত্তর/এআর