কনকনে বাতাস আর কুয়াশায় জেঁকে বসেছে শীত। দেশের আট জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয় চুয়াডাঙ্গায় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে তীব্র শীতে কষ্টে আছেন কম আয়ের মানুষ। বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগবালাই।
কয়েকদিন থেমে থাকার পর আবারও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে পঞ্চগড়ে। রাত থেকে সারাদিন বইছে কনকনে বাতাস। এতেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। দুর্ভোগে কম আয়ের মানুষ।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে কুয়াশা বাড়তে থাকে। শুক্রবার সকাল ১০টার পরও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ঘন কুয়াশার কারণে প্রতিদিন দুপুর পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করে যানবাহন।
পথচারী, রিকশা ও ভ্যান চালক ও দুঃস্থদের খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।
ঠাণ্ডা বাতাস ও কুয়াশায় শীত জেঁকে বসেছে দিনাজপুরে। শীতের তীব্রতায় ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। সে সাথে ঘন কুয়াশার ঢাকা পড়েছে জনপদ। সহসা সূর্যের দেখা মিলছে না।
রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৭ শতাংশ। সারা দিন পিনপিনে বাতাসের কারণে নগর জীবনে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তীব্র শীতে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিদেরও জবুথবু অবস্থা। আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে।
অন্যদিকে ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলো রাস্তায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। আর ঠাণ্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর চাপ।
পৌষের কনকনে ঠাণ্ডা ও হিমেল হাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়েছে উত্তরের জনপদ কুড়িগ্রামের মানুষ। সূর্যের দেখা না মেলায় কুয়াশায় ঢেকে রয়েছে প্রকৃতি।
মেহেরপুরে গত কয়েকদিন যাবত হাড় কাঁপানো শীতের সঙ্গে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। হাড় কাঁপানো শীতে শুধু জনজীবন নয়, জবুথবু হয়ে পড়েছে প্রাণীকুলও।
ঘন কুয়াশায় সূর্য্যের দেখা মিলছে না মানিকগঞ্জে। এছাড়া কনকনে বাতাসে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে কম আয়ের মানুষকে সাহায্য করা হচ্ছে।
কুমিল্লায় তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। বাড়ছে রোগ বালাই।
কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে যশোরে। গত দুদিন তাপমাত্রা থাকছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
দুই দিনের ব্যবধানে মৌলভীবাজারে তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লেও শীতের প্রকোপ কমেনি। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে ঘন কুয়াশা। এতে বিপাকে চা শ্রমিকসহ কম আয়ের মানুষ।
রাজধানীতেও কনকনে শীত পড়ছে। কুয়াশার পাশাপাশি ঠাণ্ডা বাতাস শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে তুলেছে। ফলে সর্বসাধারণের পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে রাজধানীর খেটে খাওয়া মানুষ।
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা অঞ্চলের তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি থেকে ২০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকতে পারে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, জানুয়ারি মাস, শীতের সিজন। শীত থাকাটা আসলে স্বাভাবিক। তবে কয়েকদিন ধরে শীতটা অনেক বেশি।
তিনি আরও বলেন, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে গেছে। ঢাকার তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির আশেপাশেই থাকছে, এখনও ১০ ডিগ্রির নিচে নামেনি। এজন্য শৈত্যপ্রবাহ বলছি না আমরা। তবে কনকনে শীতের অবস্থা আরও দুতিন দিন থাকতে পারে।
একাত্তর/এসি