পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যে তাণ্ডব, তার হলকায় এখনও বেদনার আগুনে পুড়ছে সুলতানা কামাল খুকীর পরিবার।
১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় সবশেষ বাবা-মায়ের সাথে দেখার ক্ষণটি এখনও ভাইয়েরা আগলে রেখেছেন পরম মমতায়।
আর, হিসাব মেলানোর চেষ্টা করেন এক শহরে থেকেও কেন মৃত সন্তানের মুখটি দেখতে পাননি বাবা-মা।
দৃশ্যটা এমন, শুরু থেকে সাত নাম্বার সারি। বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। কবরস্থানে ১৪৪ ধারা। মোতায়েন করা হয় সেনা।
জারি হয় আদেশ। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই কবরস্থানে দাফন ও দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ।
বোন যে শুয়ে আছে চার নাম্বারে- তা জানতে আর কবরের পাশে যেতে সুলতানা কামাল খুকীর পরিবারকে গুণতে হয়েছে তিন বছরের অপেক্ষা।
১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই বিয়ের পর ঠিকানা হলো ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ৬৭৭ নাম্বার বাড়িটি। মা-ভাইয়ের সাথে শেষ দেখা এর ঠিক এক মাস পর, ১৫ আগস্টের দুই দিন আগে।
আর সেই দিন থেকে বোনের ঠিকানা ছবির অ্যালবাম আর ট্রফি মেডেলে। কতোইবা আর গোণা যায়। সুলতানা কামাল খুকীর ২৩ বছর বয়সের অর্জন এক কথায় অগুণতি। ভাইয়ের ভাষায়, একেক বছর যেন ও দশ বছরের ট্রফি জিতে নিচ্ছিলো।
ঢাকা বিশ্বদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী বাবা আর খেলা প্রিয় মা চাচাদের আহলাদে জাতে খেলোয়াড় মেয়েটি তড়তড় করে জায়গা করে নিচ্ছিলো অ্যাথলিটকসের ময়দানে।
১৬ বছরেই ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানে নিজের রেকর্ড নিজে ভেঙ্গে স্বর্ণ জয়- যেন তার নামের অংশ হয়ে উঠছিলো।
যার সব আগলে রাখতে রাখতে এখন স্মৃতি যাদুঘরে। ভাইয়েরা চাইছেন, নতুন প্রজন্ম জানুক সুলতানাকে আর তার সাথে সাথে জানা হবে বঙ্গবন্ধুর পরিবারেরও অনেক অজানা কথা।
একাত্তর/এআর