ইরানে হিজাব আইন লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় ২২ বছর বয়সী মাশা আমিনির। এ ঘটনায় শুরু হওয়া বিক্ষোভ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এক সপ্তাহ অতিক্রান্ত হওয়ার পরও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে।
রোববার ইরানের রাষ্ট্র পরিচালিত টেলিভিশনের বরাতে আল-জাজিরা জানিয়েছে, বিক্ষোভকারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যকার সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ।
রাস্তায় বাড়ছে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা। অনেকে সহিংস হয়ে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন। এছাড়া হামলায় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইরানের ৩১টি প্রদেশের বেশিরভাগ অঞ্চলেই ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ, অন্যদিকে কয়েকশ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইরানের সরকার অধিকাংশ অঞ্চলের ইন্টারনেট সেবা সীমিতকরণের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ মোকাবিলা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে তিনি নতুন কোনো ঘোষণা দেননি।
উল্লেখ্য, হিজাব আইন লঙ্ঘনের দায়ে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী কুর্দি নারী মাশা আমিনিকে আটক করে। পুলিশের হেফাজতে অজ্ঞান হয়ে তিন দিন কোমায় থাকার পর শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এর পরপরই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ।
পুলিশের দাবি, মাসা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। যদিও বিক্ষোভকারীদের বিশ্বাস, পুলিশ তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ার উপকূলে নৌকাডুবি, ৯৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার
২০১৯ সালে জ্বালানির দাম নিয়ে বিক্ষোভের পর শেষ কয়েক বছরে এটিই ইরানে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের ঘটনা। রয়টার্সের তথ্য মতে, সে সময় প্রায় এক হাজার পাঁচশ' জন নিহত হয়েছিল। এটি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।
উল্লেখ্য, ইরানে জনসমাগমস্থলে মেয়েদের হিজাব বা স্কার্ফ দিয়ে মাথার চুল ঢেকে রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
একাত্তর/আরবিএস
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.