বহুল আলোচিত নিখোঁজ ঘন্টার কেন্দ্রে থাকা খুলনার দৌলতপুরের
মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসিন্দা রহিমা বেগম একই দিনে কয়েকবার নিজের
কথা পরিবর্তন করেছেন। সেই সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আচরণও পরিবর্তন করেছেন।
নিজ বাসার উঠোন থেকে নিখোঁজের ২৯ দিন পর রহিমা বেগমকে
ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে শনিবার রাতে উদ্ধার করা হয়।
এরপর তাকে রাতেই খুলনায় নিয়ে আসা হয়। উদ্ধারের পর থেকেই রহিমা নির্বাক হয়ে থাকেন।
নিখোঁজের বিষয়ে তিনি কোন কথাই বলছিলেন না। রোববার
সকালে ছেলে-মেয়েরা দেখা করতে এলে তিনি তাদের সঙ্গে দেখাও করতে চাইছিলেন না। পরে
পুলিম কর্মকর্তাদের অনুরোধে দেখা করলেও কোন কথা বলেননি। রহিমা তার স্বামীর সঙ্গেও
কথা বলতে রাজি হননি।
কিন্তু দুপুরে খুলনা পিবিআই কার্যালয়ে চার মেয়ের
সঙ্গে দেখা হবার রহিমা বেগমের আচরণ পাল্টে যায়। এ সময় মেয়েরা মাকে জড়িয়ে ধরে
কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে রহিমা বেগম দাবি করেন, তিনি অপহরণের শিকার হয়েছিলেন।
পরে বিকালে আদালতের কাছে দেয়া জবানবন্দিতে রহিমা খাতুন দাবি করেন, তাকে চারজন অপহরণ করেছিলো। এরমধ্যে তিনি প্রতিবেশী মহিউদ্দিন ও তার ভাই গোলাম কিবরিয়া পলাশকে চিনতে পেরেছেন। বাকি দুজনকে তিনি চিনতে পারেননি।
রহিমা বেগম জানান, পলাশ এবং মহিউদ্দিন তার মুখে রুমাল
চেপে অজ্ঞান করে। এরপর সে নিজেকে চট্টগামে আবিস্কার করেন। সেখান থেকে রহিমা বেগম
ঢাকা হয়ে মোকসেদপুর গিয়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামে চলে যান।
সেখানে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে অবস্থান করে মেয়েদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করার আগ মুহূর্তে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। বাদী পক্ষের আইনজীবী আফরুজ্জামান টুটুল বলেন, ভিকটিম আদালতকে তার অপহরণের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রহিমার নিখোঁজ নাটকের পুরোটাই সাজানো?
সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, জমিজমা নিয়ে যাদের সাথে বিরোধ ছিলো, মূলত তারাই তাকে অপহরণ করে চট্টগ্রামে
নিয়ে যান। সেখানে থেকে তিনি ফরিদপুরে আসেন। মামলায় যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে চার-পাঁচ
জন অপহরণের সঙ্গে জড়িত।
জবানবন্দি শেষে রহিমা বেগমকে মুখ্য মহানগর আদালত-৪ এর
বিচারক সারোয়ার আহমেদ মামলার বাদী ও তার মেয়ে আদুরী খাতুনের জিম্মায় হস্তান্তর
করেন। আদালতের নির্দেশে গেলো ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তভার বুঝে নেয় পিবিআই
খুলনা।
মামলার তদন্ত করছেন পিবিআই পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। এর আগে মামলার তদন্তকালে পুলিশ ও র্যাব ৬ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতাররা হলেন কুয়েট কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া, রহিমার স্বামী হেলাল হাওলাদার, প্রতিবেশী মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল ও হেলাল শরীফ।
একাত্তর/আরবিএস
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.