কাতার জুড়ে নয়নাভিরাম সব স্টেডিয়ামে চলছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর বিশ্বকাপ ফুটবল। শিরোপা লড়াই শুরু হয়েছে আগেই। প্রিয় দলের সমর্থনে রঙিন উৎসবে মাতোয়ারা দর্শক। তাদের এই উৎসবে বাধা হতে পারেনি কোডিড। কারো মুখেই নেই মাস্ক। আর স্বাস্থ্যবিধির তো কোনো বালাই নেই।
এমন দৃশ্যপট রাগ ধরাচ্ছে চীনা নাগরিকদের। তাদের প্রশ্ন, বিশ্বকাপ কি ভিন্ন কোনো গ্ৰহে হচ্ছে? কোভিডকে সাথে নিয়ে যদি কাতার বিশ্বকাপ করতে পারে তাহলে তাদেরকে এতো কঠিন সব বিধি-নিষেধ মেনে চলতে হচ্ছে কেনো, এমন প্রশ্ন এখন চীনাদের সামাজিক মাধ্যমে ঘোরাফেরা করছে।
সম্প্রতি চীন জুড়ে আবারো করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের বড় বিস্তার ঘটেছে। দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ৩০ হাজারের কাছে। রাজধানী বেইজিং থেকে বহু শহরেই নেমে এসেছে লকডাউনের মতো কঠিন বিধি-নিষেধ। কারণ চীন প্রথম থেকেই কোভিডের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছে।
তাই বলে তো মানুষের মনকে আটকে রাখা যায় না। বিশ্বকাপ বলে কথা। শুধু কাতার নয়, গোটা বিশ্বের মানুষ এখন ব্যস্ত এই আসর নিয়ে। কতোই না আয়োজন, কতোই না উৎসবের রং ছড়াচ্ছে ফুটবল প্রিয় মানুষ। সেখানে কিনা চীনাদের থাকতে হচ্ছে ঘর বন্দী হয়ে। একা একা খেলা দেখতে কারই বা ভালো লাগে। আর এসবই এখন প্রকট হয়ে উঠছে।
ওমিক্রনের দাপটে গেলো মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) থেকে চীনের প্রায় এক চতুর্থাংশ মানুষ কোন না কোন ধরনের বিধি-নিষেধের মধ্যে বসবাস করেছেন। এমন দৃশ্যপট কাতারে চলমান বিশ্বকাপ উত্তেজনার সঙ্গে বড়ই বেমানান। আর সেই কারণেই চীনাদের মনে এক ধরনের অসন্তোষ কাজ করছে, যার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে দেশটিতে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত সামাজিক মাধ্যমে।
বুধবার গুয়ানডং প্রদেশের এক শিক্ষার্থী তার উইবো পেজে পোস্ট দিয়ে বলেছেন, এ কেমন কথা, কাতারে সবাই খেলা দেখছে কোনো মাস্ক না পরেই। সেখানে চীনে অনেকে বাসা থেকেই বের হতে পারছে না। শিক্ষার্থীদেরও ক্লাসেও যেতে দেয়া হচ্ছে না।
উইবো হচ্ছে টুইটারের চীনা সংস্করণ।
আরেক উইবো ব্যবহারকারী লিখেছেন, কাতার বিশ্বকাপ আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। না হলে পৃথিবীতে কি হচ্ছে তার কিছুই দেখা যেতো না। চীনের রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে থাকা সিসিটিভি বিশ্বকাপের খেলা সরাসরি দেখাচ্ছে।
চীনারা বলছেন, অন্য সব দেশের মতো চীন কেন কোভিড দমনে অন্য দেশের উদাহরণ ফলো করছে না।
আরও পড়ুন: নেইমারের পর ইনজুরিতে ছিটকে গেলেন দানিলো
কোভিড নিয়ে দেশটির জিরো টলারেন্স নীতিতেও হাঁপিয়ে উঠেছেন চীনা নাগরিক। বিশ্বের সব দেশ থেকে লকডাউন উঠে গেলেও চীনে আছে।
এ নিয়ে চীনাদের ক্ষোভের কারণ আছে। তারা মনে করছে, এতে দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাই কাতারের ভৌগলিক অবস্থান নিয়ে চীনা নাগরিকরা প্রশ্ন তুলতেই পারেন।
একাত্তর/আরএ
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.