নিজেদের প্রথম ম্যাচে রিচার্লিসনের জোড়া গোলে সার্বিয়াকে হারিয়ে অধরা হেক্সা মিশনের দুর্দান্ত সূচনা করে ব্রাজিল। তবে এই ম্যাচেই জয় ছাপিয়ে হলুদ জার্সিধারীদের চিন্তায় আসে দলের প্রাণভোমরা নেইমারের ইনজুরি। তবে সে শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে ১-০ গোলে দুর্দান্ত জয় পায় তিতের শিষ্যরা।
গোড়ালির চোটে গ্রুপ পর্বে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচে নেইমারকে পায়নি ব্রাজিল। নেইমারের সঙ্গে চোটে পড়েন সেলেসাও রাইটব্যাক দানিলোও।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় ১০টায় ‘জি’ গ্রুপের ম্যাচটি শুরু হয় স্টেডিয়াম ৯৭৪’এ।
প্রথমার্ধে তেমন ভালো কোনও মুভমেন্ট দেখা যায়নি ব্রাজিলের। তবে দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় তিতের শিষ্যরা।
খেলার সাত মিনিট পর একটুর জন্য মেলেনি গোল। সুইজারল্যান্ডের চারজনের ঘেরের মধ্য থেকেই ভিনিসিউস খুঁজে নেন পাকেতাকে। তার ক্রসে সুযোগ ছিল রিশার্লিসনের সামনে। কিন্তু তিনি পারেননি স্লাইড করে বলে পা ছোঁয়াতে। সেই সুযোগে বিপদমুক্ত করেন এলভেদি।
২৭তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয় ব্রাজিলের। বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড রাফিনিয়ার চমৎকার ক্রসে ভিনিসিউসের কাছের পোস্টে নেওয়া দুর্বল ভলি ঠেকিয়ে দেন ইয়ান সমের। বেঁচে যায় সুইজারল্যান্ড।
ম্যাচের ৩০ মিনিটে গুছিয়ে আক্রমণে যায় ব্রাজিল। ডি বক্সের বাইরে থেকে রাফিনহার নেওয়া শট নিজের গ্লোভসে নেন সোমার। ম্যাচের ৩২ মিনিটে গুছিয়ে আক্রমণে গেলেও গোলমুখে শট করতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিল। সেখান থেকে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় সুইজারল্যান্ড। তবে তা আটকে দেন এডার মিলিতাও। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে গোছানো আক্রমণ থেকে ডি বক্সের বাইরে থেকে গোলমুখে শট করে এডার মিলিতাও। তবে তা ডিফেন্ডারদের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়।
৪৩ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে বল বাড়ান রাফিনহা। তবে তা কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করে ডিফেন্ডাররা। কর্নার থেকে আবারও কর্নার পায় ব্রাজিল। কর্নার থেকে সুযোগ তৈরী করলেও তা থেকে গোল করতে পারেনি ব্রাজিল।
ম্যাচের অতিরিক্ত মিনিটে কর্নার পায় সুইজারল্যান্ড। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত কোন গোল না হলে গোলশূন্য থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে ব্রাজিল ও সুইজারল্যান্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫১ মিনিটে অল্পের জন্য গোলবঞ্চিত হয় সুইজারল্যান্ড। ডানপ্রান্ত দিয়ে ডিবক্সে বিপজ্জনক বল ফেলেন সুইজারল্যান্ডের এক খেলোয়াড়। গোললাইনের ঠিক সামনে থেকে বল ক্লিয়ার করেন থিয়াগো সিলভা।
৫৬ মিনিটে সুবর্ন সুযোগ মিস করেন রিচার্লিসন। বাঁ প্রান্ত থেকে ভিনিসিউসের দুর্দান্ত ক্রসে পা লাগালেই আসরে তৃতীয় গোল পেতে পারতেন তিনি। পা লাগাতেই পারেননি এই স্ট্রাইকার।
৫৮ মিনিটে ফ্রেডকে তুলে ব্রুনো গুইমিরেসকে নামান তিতে। দুটো পরিবর্তন করেন সুইজারল্যান্ডের কোচও।
পরিবর্তন করে খেলতে নেমে টানা দুই মিনিট ব্রাজিলের রক্ষণের ওপর ঝড় বইয়ে দেয় সুইজারল্যান্ড। তবে তাদের আক্রমণগুলো প্রতিহত হয় ব্রাজিলের রক্ষণদূর্গে।
ম্যাচের ৬৪ মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের গোলে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় ব্রাজিল। কিন্তু গোলের পরে ভিএআরের মাধ্যমে দেখা যায় গোলটি অফসাইডে ছিল। শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায়।
এরপর ম্যাচের ম্যাচের ৮৩ মিনিটে দুরন্ত গোল করে ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন ক্যাসিমেরো।
আরও পড়ুন: প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে ঘানার কাছে হারলো দক্ষিণ কোরিয়া
অতিরিক্ত সময়ে বেশ কয়েকবার আক্রমণ করে থিয়াগো সিলভারা। তবে বল আর ইয়ান সোমারকে ফাঁকি দিতে পারেনি। শেষমেষ ১-০ তে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রাফিনহা-রিচার্লিসনরা।
এর আগে বিশ্বকাপে ব্রাজিল কখনোই সুইজারল্যান্ডকে হারাতে পারেনি। ১৯৫০ বিশ্বকাপে ২-২ গোলে ড্রয়ের পর ২০১৮ বিশ্বকাপে এই দুই দলের খেলা ড্র হয়েছিল ১-১ গোলে। এবারের জয়ে যেনো সুইস দুঃখ ঘুচলো নেইমারদের।
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.