নারায়ণগঞ্জে একটি ক্লিনিকে টনসিল অপারেশনের সময় পাঁচ বছরের এক মাদরাসাছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শিশুটির স্বজনদের অভিযোগ, এ অনাকাঙ্খিত এ ঘটনায় বিক্ষোভ করলে ক্লিনিকের মালিক পক্ষ স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহায়তায় লাশ জিম্মি করে। পরে আপোষনামায় সই করিয়ে নেয়।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাতে জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা এলাকার রূপগঞ্জ পপুলার হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই শিশুটির নাম ইভা আক্তার (৫)। সে আড়াইহাজার উপজেলার নারায়ন্দী এলাকার ব্যবসায়ী মামুনের মেয়ে ও স্থানীয় তিনচন্দী মহিলা মাদরাসার সুরাত ফালে বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল।
শিশুটির পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে ইভার টনসিলজনিত সমস্যায় ওই ক্লিনিকের নাক, কান গলার চিকিৎসক ডা. সাজ্জাদ সামাদের কাছে নিয়ে আসেন। পরে তিনি শিশুটিকে দেখে অপারেশন করানোর সিদ্ধান্ত নেন। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নেয়া হয়। এরপর চিকিৎসক ডা. মেহমুদ তাহমিদুল আলামীন চেতনানাশক ইনজেকশন পুশ করার তিন মিনিটের মধ্যে ইভার মৃত্যু হয়।
কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টা পর চিকিৎসক জানান ইভা মারা গেছে। এ খবর ছড়িয়ে পরলে তারা বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে ওই হাসপাতাল অবরোধ করে রাখেন।
এসময় হাসপাতালের মালিকপক্ষ ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা লাশ দেবে না বলে জানায়। তখন বাধ্য হয়ে ইভার বাবা মামুন আপোষনামায় সই করে রাত ১১টার দিকে মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে যান।
শিশুটির মৃত্যু ভুল চিকিৎসায় হয়েছে দাবি করে তার পরিবার অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে ক্লিনিকটির অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের চিকিৎসক ডা. মেহমুদ তাহমিদুল আলামীন বলেন, সব ধরনের পরীক্ষা করে শিশুটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে চেতনানাশক (অ্যানেসথেশিয়া) ইনজেকশন পুশ করা হয়। কিন্তু এরপর তিন মিনিটের মধ্যে তার পালস বন্ধ হয়ে যায়। বহু চেষ্টা করেও তাকে আর বাঁচানো যায়নি। তবে কেন এমন হলো বুঝতে পারছিনা।
ক্লিনিকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিলন মিয়া বলেন, হঠাৎ যেকোনো মানুষের যেকোনো কিছু হতে পারে। হাসপাতালে চিকিৎসকের কোনো ভুল চিকিৎসায় শিশুটি মারা যায়নি। যেহেতু শিশুটি মারা গেছে, তাই এখন তার পরিবার কতো কথাই বলতে পারে!
ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় পরিবারের অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একাত্তর/এসি
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.