বিএনপির ছেড়ে দেয়া সংসদের ছয় আসনের উপনির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি পাঁচ শতাংশের বেশি ছিলো না বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
গত বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪ ও ৩ আসনে উপনির্বাচন হয়। এই নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি কম ছিলো সিইসি নিজেই স্বীকার করেছেন।
সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে মির্জা ফখরুল বলেন, এই উপ নির্বাচনগুলোতে ভোটারের সংখ্যা কোথাও তাদের (ইসি) হিসাব মতে ১৫ থেকে ২৫ শতাংশের বেশি হয় নাই।
তিনি বলেন, আর আমাদের (বিএনপি) হিসাব মতে- এটা ৫ শতাংশের বেশি হয় নাই। আজকে পত্র-পত্রিকাগুলোতে যে ছবিগুলো আসছে দেখবেন একেবারে ২০১৪ সালে… শফিউল আলম প্রধানের (প্রয়াত জাগপা প্রধান) ভাষায় কুত্তা মার্কা নির্বাচনের মতই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনলাইনে দেখেছি কুকুর শুয়ে আছে, মানুষ নাই। এই অবস্থায় তারা (সরকার) নিয়ে চলে গেছে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে।
দেশে লুট-দুর্নীতি বিস্তার লাভ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, লাগামহীন দুর্নীতি করে বিশ্ব মন্দার কথা বলে কোনো লাভ নেই। দুর্নীতির মাধ্যমে প্রত্যেকটি দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে।
সংসদে সম্প্রতি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল জানান, শুধু জাপানকে নয়, তারা অনেক দেশকে চিঠি দিয়ে সরকারের লুটপাট, দুর্নীতি ও গুমের বিষয়গুলো জানিয়েছেন। এ বিষয়টি সত্য।
তিনি আরও বলেন, তারা সমানে মিথ্যাচার করছেন, সংসদে মিথ্যাচার করছেন, বিদেশিদের সামনে মিথ্যাচার করছেন- সব সময় বলছেন যে, এখানে কোনো মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়নি। বাংলাদেশে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে সেটার নজির খুব আছে।
সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, যেখানে দুর্নীতি লাগামহীন, যেখানে চুরি হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য, সেখানে আপনার বিশ্ব মন্দার কথা বলে কোনো লাভ নেই। বিশ্ব মন্দার পরে আপনারা মানুষের জীবনকে দুঃসহ করে তুলছেন।
তিনি বলেন, চালের দাম আপনারা বাড়াচ্ছেন, লবণের দাম, তেলের দাম আপনারাই নিয়ন্ত্রণ করছেন। আজকে বিদ্যুতের দাম ২ বার, ৩ বার, ৪ বার, ৫ বার… ১৫ বার বাড়িয়েছেন। কিন্তু বিদ্যুতে যে চুরি আপনারা করছেন সেই চুরি বন্ধ করলে তো বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হয় না।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন নতুন করে রাস্তা খোঁড়া শুরু হয়েছে। এই যে চলমান প্রক্রিয়া লুটের এই তো চলছে। এভাবে লুট করে তারা বিদেশে পাচার করছে এবং দেশের প্রতি জনগণের প্রতি যেহেতু কোনো দায়বদ্ধতা নেই সেজন্য তারা আজকে লাগামহীনভাবে দুর্নীতি করে চলেছে।
আরও পড়ুন: এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট সম্ভব না: হিরো আলম
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, এই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা যখনই কর্মসূচি দিচ্ছি তখন একই সময় তারা পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। তারা যে ভাষা ব্যবহার করছে সেটা সম্পূর্ণভাবে সন্ত্রাস করছে।
সংবাদ সম্মেলনের আগে ফখরুলের সভাপতিত্বে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাদের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সরকারের দমন-পীড়ন, বিদ্যুতসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবিতে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় সদরে সমাবেশের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকার কর্মসূচির প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।
একাত্তর/এসজে
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.