পঞ্চগড়ে পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সির মাধ্যমে পাশ করে মৌখিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে পঞ্চগড়ে নিয়োগ বোর্ডের কাছে ধরা পড়েছেন দুই নারী পরীক্ষার্থী।
একই সময়ে জালিয়াতির অভিযোগে আরো দুইজনকে আটক করা হয়।
পঞ্চগড় পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডের সদস্য সচিব বিপ্লব বড়ুয়া বাদী হয়ে থানায় এফআইআর দায়ের করেন।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠানো হয়।
এর আগে গত সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে তাদের আটক করে নিয়োগ বোর্ড। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে থানা পুলিশের হেফাজতে দেয়া হয়।
আটককৃতরা হলেন- পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর তেলিপাড়া গ্রামের পরীক্ষার্থী ইয়াসমিন (২১), একই উপজেলার মির্জাপুর নলপুকুরি গ্রামের পরীক্ষার্থী মৌসুমি আক্তার (২৮), মির্জাপুর তেলিপাড়া গ্রামের সাইদুর রহমান (২৪) এবং ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী বড়বাড়ি গ্রামের আসামি ইয়াসমিনের স্বামী এএসআর মাসুদ রয়েল (২৮)।
এদিকে পঞ্চগড় সদরের ধাক্কামারা এলাকার দুলালসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ ও এজাহারে জানা যায়, গত ২৫ নভেম্বর পঞ্চগড় জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় আসামি ইয়াসমিন এবং মৌসুমীর পঞ্চগড় সরকারি গার্লস স্কুলে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিলো। কিন্তু প্রক্সির মাধ্যমে অন্যরা এই পরীক্ষায় অংশ নেয়।
পরবর্তীতে ২৮ নভেম্বর দুপুরে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসেন ইয়াসমিন ও মৌসুমী। এ সময় তাদের পরীক্ষার প্রশ্নের বিষয়ে নানান বিষয়ে জানতে চাইলে তারা অসংলগ্ন জবাব দেন।
পরিবার কল্যাণ সহকারীর মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডের প্রাথমিকভাবে সন্দেহ হলে তাদের লিখিত পরীক্ষার দিনের উত্তরপত্রের অনুরূপে সাদা পৃষ্ঠায় লিখতে দেন।
এ সময় লিখিত পরীক্ষার লেখার সাথে মৌখিক পরীক্ষায় দেওয়া লেখার কোন মিল না থাকায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে কৌশলে বোর্ড প্রক্সির বিষয়টি জানতে পারে এবং অপর আসামিদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করে।
এরপর অভিযুক্ত দুইজনের মাধ্যমে অপর দুই আসামিকে ডাকা হয় এবং কৌশলে তাদের আটক করে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের হেফাজতে তুলে দেয়া হয়।
এদিকে, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি ইয়াসমিন স্বীকার করেন তার ভাই সাইদুর এবং স্বামী রয়েল তাকে লিখিত পরীক্ষায় পাস করার বিষয়ে সহায়তা করেন।
সাইদুর ও রয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা জানান, পঞ্চগড় সদর থানার ধাক্কামারা ইউনিয়নের দুলাল নামে পলাতক অপর ব্যক্তি ইয়াসমিনকে পরীক্ষায় না দিয়ে প্রক্সির মাধ্যমে পাশ করে চাকরি নিয়ে দিবেন বলে ১২ লাখ টাকায় চুক্তি করেন।
আরও পড়ুন: বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বগুড়ায় জরুরি অবতরণ
এদিকে মৌসুমিকেও সাইদুর, রয়েল এবং দুলাল টাকার বিনিময়ে প্রক্সির মাধ্যমে চাকরি দেয়ার চুক্তি করে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা পক্সিতে পরীক্ষা দেয়া চারজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, এ ঘটনায় যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একাত্তর/আরএ
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.