সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার সম্পদ জব্দে শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে চিঠি পাঠাবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিষ্ঠানটির সচিব জানান, প্রধান বিচারপতি থাকাকালে নানাভাবে অর্জিত অর্থ হুন্ডিসহ অবৈধ পন্থায় যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেন এস কে সিনহা। এ টাকা দিয়ে সিনহার জন্য সেখানে কেনেন তার ভাই।
ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত আসামি সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, প্রধান বিচারপতি থাকাকালে তিনি অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থ হুন্ডিসহ বিভিন্ন উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেন। এ টাকা দিয়েই ২০১৮ সালে প্রায় আড়াই কোটি টাকা দিয়ে ভাই অনন্ত কুমার সিনহার মাধ্যমে নিউজার্সিতে তিনি তিনতলা একটি বাড়ি কেনেন।
বুধবার (১৫ মার্চ) বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, সিনহা তার ছোট ভাই অনন্ত কুমারের নামে আমেরিকার প্যাটারসন এলাকায় ২০১৮ সালের ১২ জুন ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার দিয়ে তিনতলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি ক্রয় করেন।
বাড়ি ক্রয়ের অর্থ ইন্দোনেশিয়া এবং কানাডার রয় এ গ্রুপের কাছ থেকে পাওয়া। যা প্রকৃতপক্ষে একটি অস্তিত্বহীন সেল কোম্পানি। অনন্ত কুমার সিনহা ১ লাখ ৫৭ হাজার, ৯০ ডলারের চেক সংগ্রহের জন্য তার বড় ভাই এস কে সিনহাকে নিয়ে আমেরিকার ড্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকে আসেন। এস কে সিনহা ওই ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানান, আমেরিকার প্যাটারসন এলাকায় বাড়ি ক্রয়ের জন্য বন্ধুর কাছ থেকে তিনি ফান্ড পেয়েছেন।
দুদক সচিব বলেন, এস কে সিনহা বাংলাদেশে প্রধান বিচারপতি থাকাকালে বিভিন্নভাবে অবৈধ টাকা অর্জন করে তা হুন্ডিসহ বিভিন্ন কায়দায় আমেরিকায় পাচার করে তার ছোট ভাইয়ের একাউন্টে ওই টাকা ট্রান্সফার করেন এবং তা দিয়েই ১৭৯, জ্যাপার স্ট্রিট, প্যাটারসন নিউজার্সি ঠিকানায় একটি বাড়ি ক্রয় করেন। যা অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মাহবুব হোসেন বলেন, অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে চার কোটি টাকার ভুয়া ঋণ সৃষ্টি করে। পরে ওই অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর ও মানিলন্ডারিং করার কারণে বিশেষ আদালত-৪ এস কে সিনহাসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে ১১ বছরের সাজা ও এস কে সিনহার আমেরিকার বাড়ি ক্রোকের আদেশ দিয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী খুব শিগগিরই দুদক থেকে আমেরিকায় অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে আইনি চিঠি পাঠানো হবে।
দুদক সচিব বলেন, এ ঘটনায় সিনহার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার। পরে তিনি তদন্তকালে এস কে সিনহার ওই বাড়ি ক্রোকসহ আমেরিকার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের জন্য আদালতে আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত ওই বাড়িটি ক্রোকসহ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দেন। ফলে বাড়িটি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা আমেরিকায় শিগগিরই চিঠি পাঠাবেন।
একাত্তর/এআর
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.