ঢাকা ০৯ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

লন্ডনের পর সান-ফ্রান্সিসকোয় ভারতীয় দূতাবাস খালিস্তানি হামলা

একাত্তর অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৩ ২০:০৭:২৪ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৩ ২০:১৯:২৫
লন্ডনের পর সান-ফ্রান্সিসকোয় ভারতীয় দূতাবাস খালিস্তানি হামলা

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বিক্ষোভ প্রদর্শনের একদিন পরেই খলিস্তানি সমর্থকরা এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে অবস্থিত ভারতীয় কনস্যুলেটে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পঞ্জাবের খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংহের মুক্তির দাবিতে এ হামলা চালানো হয়েছে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস নাও ও আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (২০ মার্চ) সান ফ্রান্সিসকোতে অবস্থিত ভারতীয় কনস্যুলেটে খলিস্তানের হলুদ পতাকা ও দেয়ালে ‘ফ্রি অমৃতপাল’ লেখা গ্রাফিতি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। 

এদিকে অমৃতপালের মুক্তির দাবি তুললেও তাকে এখনও আটক বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের চোখে ধুলা দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ‘ওয়ারিশ পঞ্জাব দে’ বা 'পাঞ্জাবের উত্তরাধিকারী' আন্দোললনের এ নেতা।

অমৃতপাল সিংহ 

সান ফ্রান্সিসকোয় দূতাবাসে হামলার একাধিক ভিডিও সোমবার সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। তবে ভিডিওতে দেখা গেছে, খলিস্তানিদের হলুদ পতাকা আটকানো লাঠির অংশ দিয়ে দূতাবাসের মূল দরজার কাচ ভাঙছেন অনেকে। দূতাবাসের ভিতরেও ঢুকে পড়েন তারা। এরপর ভেতরেই ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ।

সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, সান ফ্রান্সিসকোর আগে রোববার লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসে প্রায় একই ধরনের হামলা চালিয়েছেন খলিস্তানপন্থীরা। লন্ডনের দূতাবাসে ভারতের জাতীয় পতাকাও নামিয়ে ফেলা হয়। সমাজমাধ্যমে সেই ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছে। 

এদিকে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে, লন্ডনে "ব্রিটিশ নিরাপত্তার সম্পূর্ণ অনুপস্থিত" থাকা ও লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসে হামলার বিষয়ে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, 'খালিস্তান' দক্ষিণ এশিয়ার পাঞ্জাব অঞ্চলে জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে প্রস্তাবিত একটি স্বতন্ত্র ও সার্বভৌম দেশ। প্রস্তাবিত রাষ্ট্রকে ভূখণ্ডগতভাবে ভারতীয় পাঞ্জাব রাজ্য থেকে শুরু করে বৃহত্তর পাঞ্জাব অঞ্চল পর্যন্ত অথবা প্রতিবেশী ভারতীয় রাজ্যসমূহকেও অন্তর্ভুক্ত করে সংজ্ঞায়িত করা হয়। পাঞ্জাব অঞ্চল শিখদের ঐতিহ্যগত মাতৃভূমি। ইংরেজ দ্বারা অধিকৃত হবার আগে পাঞ্জাব শিখদের দ্বারা ৮২ বছর শাসিত হয়; ১৭৬৭ থেকে ১৭৯৯ সাল পর্যন্ত সমগ্র পাঞ্জাব শিখ মিসল (সার্বভৌম শিখ রাষ্ট্র) সমূহের অধীন ছিল, তারপর মহারাজা রণজিৎ সিং শিখ মৈত্রী সঙ্ঘকে শিখ সাম্রাজ্যের মাঝে একীভূত করেন। 

সেখানে শিখদের পাশাপাশি অনেক হিন্দু ও মুসলিমও বসবাস করত। ১৯৪৭ সালের আগে শিখরা ব্রিটিশ অখণ্ড পাঞ্জাব রাজ্যের শুধুমাত্র লুধিয়ানা জেলায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে মুসলিম লীগ যখন মুসলিমদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্রের দাবি জানায়, তখন কিছু শিখ নেতা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন যে হিন্দু ও মুসলিমের ভিত্তিতে ভারত বিভাজিত করলে শিখ সম্প্রদায়ের কোনো স্বাধীন মাতৃভূমি থাকবে না। তারা তখন বৃহত্তর পাঞ্জাব অঞ্চলে বিস্তৃত খালিস্তান নামক একটি ধর্মরাষ্ট্র সৃষ্টির ধারণা পেশ করেন। তখন থেকে এই আন্দোলনের সূত্রপাত। 


একাত্তর/আরবিএস  

মন্তব্য

এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.

আপনার মন্তব্য লিখুন

Nagad Ads