নিত্য ও ভোগ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি নিয়ে দু'রকম কথা বলছে সরকারের দুই সংস্থা- পরিসংখ্যান ব্যুরো ও টিসিবি। পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শহরে জীবনযাত্রার খরচ বেড়েছে আট দশমিক সাত আট শতাংশ।
আর টিসিবি বলছে, বছর ব্যবধানে পণ্যের দাম ১০ থেকে সর্বোচ্চ ১১১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রীর দাবি, বাজার আর মজুরি সচল থাকায় মানুষের গায়ে এর উত্তাপ লাগছে না।
রমজানের এই সময়ে সারাদিন রোজা রেখে ভালমন্দ খাবারের চিন্তাটা বিলাসিতা জেনেই হয়তো এই রাজধানীর একজন জাহানুর বেগমের পান্তা আর করলা ভাজি দিয়ে ইফতারের আয়োজন।
স্বামীর মাত্র ৯ হাজার টাকা রোজগার; দিনরাত বাসা বাড়িতে কাজ করে তার আয়ও বেশি না। দুই জনের আয় দিবেও দিন চলছে না। ফলে খাবার নিয়ে বিলাসিতার কোন সুযোগ নেই।
অন্যদিকে, এক মেয়ের পর আরেক সন্তান আসার আয়োজনে ব্যস্ত মনির। অথচ তার মাসে ১৮ হাজার টাকার আয়ে বেঁচে থাকার ন্যুনতম চাহিদাই মেটে না।
এরপর আবার ভালো মন্দ খাওয়া। পাতভরে কবে মাংস খেয়েছে, মনেও পড়ে না মনির। আর এখন তো মাংস কেনার কথা চিন্তাই করেন না। শেষ হবে কিনেছেন সেটাও মনে নেই।
আর্থিক আর সামাজিক অবস্থানে জাহানুর আর মনির থেকে বেশ এগিয়ে থাকা রফিকুল ইসলাম, পেশায় ব্যবসায়ী। কিন্তু তারও সংসারে টানাটানি বাড়তি খরচের ধাক্কায়।
ডাল-ভাত ছাড়া তার কাছে বাকি সব কিছুই বিলাসিতা। জানালেন, ব্যবসায়ে লাভের পরিমাণ দিনকে দিন কমে আসায় খরচের হাতও গুটিয়ে নিতে হয়েছে।
অথচ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব বলছে, গেল বছরের তুলনায় একই পণ্য ও সেবা কিনতে ৯ টাকা বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
যদিও সরকারের আরেক সংস্থা টিসিবির হিসাবে, বছর ব্যবধানে আদা, ডাল, ময়দা, চিনি , খেজুর, শুকনা মরিচের মতো পণ্যের দাম বেড়েছে ১০ থেকে সর্বোচ্চ ১১১ শতাংশ হারে।
ডিম, ব্রয়লার মুরগী কিংবা প্রতি কেজি খাসির যে দামও বেড়েছে কমপক্ষে ১০ শতাংশের ওপরে। তবে বাজারের চিত্রের সঙ্গে এই পরিসংখ্যানেরও কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন: আজ থেকে ব্যাংক-অফিসের নতুন সূচি
নিত্যপণ্যের চড়া দামে ভোক্তাদের যে নাভিশ্বাস- তা মানেন পরিকল্পনামন্ত্রীও। তবে তার দাবি, এই বাড়ন্ত দাম দিয়ে ভোক্তা যেহেতু পণ্য কিনছেন তার অর্থ তারা অতটা দুর্দশায় পড়েননি।
এম এ মান্নান জানান, মানুষের কেনা-কাটায় স্বস্তি দিতে, বাজারকে সচল রাখার চেষ্টা করছে সরকার। আগামী অর্থবছরের বাজেটও আসছে সে ভাবনাকে কেন্দ্র করে জানালেন মন্ত্রী।
একাত্তর/এসজে
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.