ঢাকা ০৫ জুন ২০২৩, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

এক পরিবার থেকে তিনজনের বেশি ব্যাংক পরিচালক নয়

নয়ন আদিত্য, একাত্তর
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৩ ২১:২৭:০৭ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৩ ২১:৪৬:০৭
এক পরিবার থেকে তিনজনের বেশি ব্যাংক পরিচালক নয়

ব্যাংকে এক পরিবারের তিনজনের বেশি পরিচালক হতে পারবেন না, এমন বিধান রেখে আরও একবার ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন হচ্ছে। পাশাপাশি এই সংশোধনীতে ‘ইচ্ছাকৃত’ ঋণ খেলাপিদের বিষয়ে কঠোর হওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। 

মঙ্গলবার এ আইন সংশোধনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তা অনুমোদন দেয়ার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার শাখার সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে এক পরিবার থেকে চারজন করে পরিচালক থাকতে পারেন। এটা পরিবর্তন করে এখন সর্বোচ্চ তিনজন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংক পরিবারের সদস্যদের জামানতবিহীন কোন ঋণ দেয়া যাবে না বলে বিধান রাখা হয়েছে। 

মাহমুদুল হোসাইন বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯১ এর ভিত্তিতে বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একে আধুনিকায়ন ও যুগোপযোগী করার জন্য সংশোধনী প্রস্তাব আনা হয়। প্রস্তাবিত আইনে মোট ৩৪টি ধারণা রয়েছে।

তিনি জানান, সংশোধনীতে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি কারা, তার একটা সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয় উল্লেখ রয়েছে। সামর্থ্য থাকার পরও যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া ঋণ, অগ্রিম বা বিনিয়োগ বা আর্থিক সুবিধার অংশ বা তার ওপর আরোপিত সুদ পরিশোধ না করে, তাহলে তা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হবে। 

সচিব আরও বলেন, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জালিয়াতি বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজের বা পরিবারের সদস্যদের নামে আর্থিক সুবিধা নেয়ার বিষয়কেও ইচ্ছাকৃত খেলাপির আওতায় আনা হয়েছে। একই সঙ্গে যে উদ্দেশ্যে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ অগ্রিম নেয়া হয়েছে, সেই উদ্দেশ্য ব্যবহার না করলেও ইচ্ছাকৃতভাবে খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে বিবেচিত হবে।  

এমন খেলাপিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে। এ ছাড়া ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) কাছে কোম্পানি নিবন্ধনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে।

ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের তালিকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে সরবরাহ করবে, এমন বিধান রাখার কথা জানিয়ে সচিব বলেন, ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে তালিকা ভুক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উক্ত তালিকা অব্যাহতি প্রাপ্তির পর বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সময়, যা পাঁচ বছরের বেশি হবে না, অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হতে পারবেন না।

কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতার তালিকায় আসলে বাংলাদেশ ব্যাংক তার পরিচালক পদ শূন্য ঘোষণা করতে পারবে। এছাড়া ব্যাংক কোম্পানি বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যে উদ্দেশ্যে ঋণ অগ্রিম, বিনিয়োগ বা অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করা হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্য যদি সে এটা ব্যয় না করে এটাকেও ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতার সংজ্ঞায় আনা হয়েছে বলেও জানান সমন্বয় ও সংস্কার শাখার সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান।


একাত্তর/এআর

মন্তব্য

এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.

আপনার মন্তব্য লিখুন

Nagad Ads