ঢাকা ৩১ মে ২০২৩, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

ট্রাম্পকে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে নেয়া হচ্ছে না

একাত্তর অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:৪৭:০৫ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:১৫:০৬
ট্রাম্পকে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে নেয়া হচ্ছে না

এক পর্ন তারকার মুখ বন্ধ রাখতে ঘুষ দেয়ার অভিযোগে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। দেশটির ইতিহাসে এই প্রথমবার সাবেক কোন প্রেসিডেন্ট এ ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন ট্রাম্প। 

এই মামলায় হাজিরা দিতে মঙ্গলবার ডোনাল্ড ট্রাম্প আদালতে যাবেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবীরা। তবে হাজিরা দেয়ার সময় ট্রাম্পকে গ্রেফতার করা হলেও হাতকড়া পরানো হবে না বলে জানিয়েছে আমেরিকান গণমাধ্যমগুলো। 

মার্কিন পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, সোমবার ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে করে নিউইয়র্কে উড়ে যাবেন ট্রাম্প। এ সময় তাকে নিরাপত্তা দেবে দেশটির ফেডারেল এজেন্টরা। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলের দিকে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যাবেন ট্রাম্প। 

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কি ধরনের অভিযোগ আনা হবে এখন পর্যন্ত সেটি জানানো হয়নি। গ্রেপ্তারের পর তার সঙ্গে কেমন আচরণ করা হবে, অন্য অপরাধীদের মতো তাকেও আঙুলের ছাপ দিতে হবে কি না, এবং তিনি আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে কি না- এনিয়েই আলোচনা এখন তুঙ্গে। 


বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের সঙ্গে অন্যসব আসামির মতো আচরণ করা নাও হতে পারে। ফলে গণমাধ্যমের সামনে দিয়ে প্রকাশ্যে আদালতে প্রবেশ না-ও করতে হতে পারে। ট্রাম্পকে গোপনে আদালতে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হতে পারে।

তবে আদালতে হাজির হবার পর ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত অন্য আসামিদের মতো ট্রাম্পের আঙুলের ছাপও নেয়া হবে। তার মুখের ছবি তোলা হবে। ট্রাম্পকে মিরান্ডা রাইটস পড়ে শোনানো হবে। এ আইনের আওতায় ট্রাম্প সাংবিধানিকভাবে একজন আইনজীবী নিয়োগ করার অধিকার পাবেন। পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে কথা বলতেও অস্বীকৃতি জানাতে পারবেন।

পুরো প্রক্রিয়া চলাকালে সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা ট্রাম্পের সঙ্গে থাকবেন। এরপর বিচারকের সামনে হাজির না করা পর্যন্ত ট্রাম্পকে হাজতখানা বা বিশেষ কক্ষে আটক রাখা হবে। আদালতে আসামিরা যখন বিচারকের কাছে নিজেদের আর্জি পেশ করেন, তখন চাইলে সাধারণ মানুষও সেখানে হাজির থাকতে পারেন।

ছোটখাটো অপরাধের ক্ষেত্রে আসামিকে জরিমানা করা হয়। ট্রাম্প যদি ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তার সর্বোচ্চ চার বছরের জেল সাজা হতে পারে। অবশ্য আইন বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ট্রাম্পের ক্ষেত্রে জরিমানা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাকে কারাদণ্ড দেয়ার সম্ভাবনা কম। 

ট্রাম্প যদি অভিযুক্ত বা দোষীও সাব্যস্ত হন, তবু তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রচার চালিয়ে যেতে পারবেন। আর ট্রাম্পও ইঙ্গিত দিয়েই রেখেছেন, যা-ই ঘটুক না কেন, তিনি নির্বাচনের প্রচার কাজ চালিয়ে যাবেন। এই অধিকার দিয়ে রেখেছে দেশটির সংবিধান। 


কারণ, প্রার্থী দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে নির্বাচনী প্রচার চালাতে না দেয়া কিংবা প্রেসিডেন্ট হতে না দেয়ার মতো কোনো আইনই নেই যুক্তরাষ্ট্রে। এমনকি কারাগারে থেকেও রাজনীতি করে যেতে কোনো বাধা নেই। কাজেই ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর ক্ষেত্রে তাই আপাত কোনো বাধাই নেই।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত ট্রাম্প আদালতে হাজিরা দিলে, নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে তাঁর রাজনৈতিক অভিযাত্রায়। তবে আরেকটি পক্ষ মনে করে, ক্ষমতায় থাকতে ট্রাম্প দুইবার অভিশংসন হলেও, তাকে চূড়ান্তভাবে অভিযুক্ত করা যায়নি। 

আরও পড়ুন: আত্মসমর্পণ করতে পারেন ট্রাম্প, চলছে আদালতে নেয়ার প্রস্তুতি

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস অভিযোগ করেন যে, ২০০৬ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যাতে এ নিয়ে মুখ না খোলেন, সেজন্য স্টর্মিকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেন ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন।

তবে এ ধরনের অর্থ দেয়া বেআইনি কিছু নয়। ট্রাম্পকে ঝামেলায় ফেলেছে তার আইনজীবীর ব্যাংক হিসাব। যা নিয়ে কোহেন আদালতকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, তার ফি হিসাবে সেই অর্থ ট্রাম্প দিয়েছিলেন। যা সত্য নয়। আদালতে মিথ্যা বলা বড় অপরাধ। 


একাত্তর/এসজে

মন্তব্য

এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.

আপনার মন্তব্য লিখুন

Nagad Ads