অনেক বছর ধরেই আদালতে লড়াই করছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং পর্ণ তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস। দেশটিতে আইনি লড়াই চালাতে অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়। তাই তারা এখন আইনি লড়াইয়ের জন্য টি-শার্ট বিক্রিতে নেমেছেন।
মুখ বন্ধ রাখতে পর্ণ তারকা স্টর্মিকে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেয়ার অভিযোগে ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে নিউইয়র্ক ম্যানহাটনের একটি গ্র্যান্ড জুরি। এজন্য মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প।
স্টর্মি অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক ছিলো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এনিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্প আইনজীবীর মাধ্যমে তাকে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেয়। অর্থের বিষয়টি স্বীকার করলেও, যৌন সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। ঠিক এমন সময়ই ফৌজদারি মামলার বিষয়টি সামনে এলো। নির্বাচনী প্রচার ও আইনি লড়াই চালিয়ে দিতে ট্রাম্প তার সমর্থকদের কাছে মেইল পাঠিয়ে তহবিল সংগ্রহ শুরু করেছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৪ ঘণ্টায় কর্মী-সমর্থকদের কাছ থেকে চার মিলিয়ন তথা ৪০ লাখ ডলারের বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়টি জানার পর থেকে ২৪ ঘণ্টায় ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা তহবিলে এই অর্থ জমা পড়ে।
ট্রাম্পের প্রচার কর্তৃপক্ষ জানায়, দাতাদের ২৫ শতাংশের বেশি প্রথমবারের মতো ট্রাম্পকে অর্থ দিয়েছেন। আর গড়ে ৩৪ ডলার করে চাঁদা দিয়েছেন সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা। সামনের দিনগুলোতে অর্থের প্রবাহ আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়, ব্যবসায়ী ও দানবীর জর্জ সরোসের অর্থায়নে ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করে প্রসিকিউটর যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থাকে লজ্জাকর হাতিয়ার বানিয়েছেন বলে মনে করে দেশটির জনগণ। অভিযুক্ত করার নামে প্রহসনের পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই ৫০ অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ট্রাম্পের প্রচার দলকে অর্থ পাঠানো শুরু করেন।
ট্রাম্পের পক্ষ থেকে এক ই-মেইল বার্তায় বলা হয়, অরাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে যখন আমি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে কাজ শুরু করি দুর্নীতিবাজ শাসকশ্রেণী আমার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ আন্দোলনকে থামিয়ে দিতে নানা রকম চেষ্টা চালিয়েছিল তখন।
নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে সমর্থকদের আরও চাঁদা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আপনার পরিস্থিতি যদি খারাপ হয় তবে অন্য অনেকের মতো আপনারও কিছু পাঠানোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু আপনি ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির কারণে সুবিধা পেয়ে থাকেন এবং আপনার পরিস্থিতি ভালো হয় তবে আপনার পক্ষ থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প.কমে চাঁদা পাঠান।
পিছিয়ে নেই স্টর্মি ড্যানিয়েলসও। টুইট বার্তায় তিনি জানান, ট্রাম্প অভিযুক্ত হবার পর থেকে তার সই করা টি-শার্ট বিক্রির চাহিদা বেড়ে গেছে। স্রোতের মতো তার বক্তারা টি-শার্ট কেনার জন্য অর্ডার পাঠাচ্ছেন। তাছাড়া আইনি লড়াইয়ের জন্যও অর্থও আসছে প্রচার পরিমাণে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পকে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে নেয়া হচ্ছে না
পর্ণ তারকা স্টর্মির ওয়েবপেজে তার সই করা টি-শার্টসহ নানা ধরনের সামগ্রী বিক্রি করার প্রচার চলছে। তার টুইটে ৯৪ হাজারবার লাইক পড়েছে। এছাড়া তার ১০ লাখ অনুসারী রয়েছেন। এসব অনুসারীদের মধ্যে বেশিরভাগই ট্রাম্পের কঠোর সমালোচক।
ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টিকে অর্থ আয়ের উৎসব হিসাবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে স্টর্মির বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এক ওয়েব সাক্ষাৎকারে তিনি এবিষয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প যদি নির্বাচনী প্রচার ও আইনি লড়াইয়ের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন, তাহলে তার দোষ কোথায়?
একাত্তর/এসজে
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.