ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা এক মামলায় ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন দৈনিক প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। রোববার (২ এপ্রিল) বিকেলে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
এর আগে সকালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর রমনা থানায় করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। তার আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এদিকে, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কোনো গণমাধ্যম বা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আর এই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের কোনো সুযোগ নেই। প্রয়োজনে বিধি সংশোধন হবে।
স্বাধীনতা দিবসে একটি শিশুর ছবির সঙ্গে একজন দিন মজুরের বক্তব্য জুড়ে দিয়ে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদের জেরে সম্পাদক মতিউর রহমানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন একজন আইনজীবী।
মামলার বাদি আইনজীবী আবদুল মালেক। মামলায় প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ আনেন তিনি।
মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, অভিযুক্তরা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন।
রমনা থানায় দায়ের করা এই মামলায় রোববার হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন মতিউর রহমান। আবেদনের পক্ষে বলা হয়, যে ছবি ছাপা হয়েছিলো তা ১৭ মিনিটের মাথায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। মামলাটির কোনো ভিত্তি নেই।
তবে রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য, এই সংবাদের মাধ্যমে স্বাধীনতাকে হেয় করা হয়েছে। প্রথম আলো দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দুই পক্ষের বক্তব্য শেষে মতিউর রহমানকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দেয় আদালত।
আদালতে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল, ইমতিয়াজ মাহমুদ ও প্রশান্ত কর্মকার। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি।
এদিকে, কোনো গণমাধ্যম বা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। রোববার ঢাকা চেম্বারে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের প্রয়োজন আছে, এ আইন মেনে নিতেই হবে। তবে অনেকক্ষেত্রে এই আইনের মাধ্যমে হয়রানির অভিযোগ আসছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজন হলে নতুন বিধি সংযুক্ত করা বা সংশোধনের উদ্যোগ নেবে সরকার।
একাত্তর/এসি
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.