ঢাকা ০৯ জুন ২০২৩, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

বিজিবিকে তথ্য দেয়ার অভিযোগে দুই ভাইকে হত্যা, ৯ জনের ফাঁসি

নিজস্ব প্রতিনিধি, মেহেরপুর
প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:১০:৫৪
বিজিবিকে তথ্য দেয়ার অভিযোগে দুই ভাইকে হত্যা, ৯ জনের ফাঁসি

মেহেরপুরে রফিকুল ইসলাম ও আবু জেল নামের দুই সহোদর হত্যা মামলায় ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ আদেশ দেন। 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের হালিম (৩৫), আতিয়ার (৪০), শরিফুল ইসলাম (৪০), শরিফ (৪০), ফরিদ (৪৫), জালাল উদ্দীন (৪৩), আজিজুল (৩৬), মনি (২৫), দবির উদ্দীন (৩২)।  

এদের মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক রয়েছেন। বাকিরা রায় প্রদানের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি পাঁচ আসামি আরিফ, রাজিব, আলমেস, হারুন ও ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের বেকসুর খালাস ঘোষণা করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ৫ জুন কাজীপুর গ্রামের একটি মাঠ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেনসিডিল উদ্ধার করে বিজিবি। বিজিবিকে ফেনসিডিল ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে রফিকুল ইসলাম ও আবু জেলের নামে। এ ঘটনায় ঐ দিন রাতে রফিকুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে মারধর করে অভিযুক্তরা। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে রফিকুলকে উদ্ধার করে। 

পরে ১৫ জুন রাত ১০টার দিকে বিষয়টি মীমাংসার জন্য ঐ দুই ভাইকে ডেকে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। তারপর থেকেই ওই দুইজনের আর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। সেদিন ভোরে কাজীপুর গ্রামের ভারতীয় সীমান্ত মেইন পিলার ১৪৫ এর সাব পিলারের ৬ এস এর পাশে ওই দুই ভাইয়ের ক্ষত-বিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতদের বোন জরিনা বেগম গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

মামলার তদন্তভার পড়ে তৎকালীন গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানের হাতে। ২০১২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন তিনি। এ মামলায় তিনজন আসামি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।

১৭ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এই মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট কাজী শহীদুল হক ও আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট এ.কে.এম শফিকুল আলম ও অ্যাডভোকেট আতাউল গনি আন্টু।  

আরও পড়ুন: রূপগঞ্জে ককটেলসহ চারজন গ্রেপ্তার

এ মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী শহীদুল হক বলেন, এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। এ রায় নজির হয়ে থাকবে। কারণ মামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দীও রয়েছে।

অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ.কে.এম শফিকুল আলম বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। ন্যায়বিচারের জন্য উচ্চতর আদালতে আপিল করবো।  


একাত্তর/এসজে

মন্তব্য

এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.

আপনার মন্তব্য লিখুন

Nagad Ads