এবার একই জমিতে তিন ফসল চাষের আশা জাগাচ্ছে নতুন জাতের ধান ব্রি ১০২। দুইবার প্রধান ফসল ধান উৎপাদনের পর একই জমিতে চাষ করা যাচ্ছে পাট কিংবা সরিষা।
জিংক সমৃদ্ধ চিকন জাতের এই ধান উৎপাদন করে একদিকে যেমন কৃষকরা লাভবান হচ্ছে অন্যদিকে রোগবালাইমুক্ত হওয়ায় ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও কম হচ্ছে।
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর উপজেলায় মুশুদ্দি কামারপাড়া গ্রামে মাঠ ভর্তি এক ধানের সফলতার গল্পটা নতুন। বলা হচ্ছে ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের নতুন উদ্ভাবিত ধানের জাত ব্রি ১০২ এর কথা।
একই জমিতে তিন ফসল উৎপাদন, তার মধ্যে চিকন জাতের অধিক ফলনশীল রোগবালাইমুক্ত জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ১০২ ধান আশা জাগাচ্ছে এই অঞ্চলের কৃষকদের মনে।
প্রথমবারের মতো কৃষি মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনায় ব্রি- ১০২ ধান আবাদ হয়েছে মুশুদ্দি কামারপাড় এলাকায়। নতুন এই জাতের ধানে প্রচলিত জাতের ধানের মতো রোগবালাই নেই।
লম্বা, চিকন প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এই ধানের ভাত ঝরঝরে এবং খেতে সুস্বাদু। ব্রি ধান-২৯ এর বিকল্প হিসেবে এই ধানের আবাদ করা যায়।
গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, আমনের মৌসুমে ব্রি ৭৫ আবাদ করার পর মাঝে বারি সরিষা আবাদ করেন তিনি, এরপর কিছুটা দেরিতে রোপন করেন ব্রি ১০২।
সব মিলিয়ে তিন ফসলে এই বছর বাড়তি আয় হয়েছে তার। চিকন ধানের জাতের মধ্যে এই জাতই সর্বোচ্চ ফলন দিয়েছে। চিকন ধানে এটি নতুন আশা জাগিয়েছে।
গ্রামের অন্য কৃষকরা বলেন পুরানো জাতের ধানের তুলনায় এই ধান শক্তিশালি। গেল ক’দিনের ঝড়ো বাতাসে অন্য ধান নুয়ে পড়লেও এটি পক্ত অবস্থায় আছে সে সাথে উৎপাদনও বেশ ভাল।
ব্রি থেকে উদ্ভাবিত নতুন জাতগুলো ফলন আগের পুরনো জাত ব্রি ধান ২৮ ও ২৯ এর তুলনায় অনেক বেশি। হাইব্রিড ধানের সমান ফলন দিতে সক্ষম এই ধান।
সে সঙ্গে পুরোনো জাতগুলোর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় নতুন জাতের ধান চাষাবাদের কথা বলছেন ধান গবেষনা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর
বোরো মৌসুমে আবাদ উপযোগী ব্রি ১০২ আধুনিক উপসী ধানের বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। সাদা চিকন জাতের এই ধানে আছে ২৫.৫ মিলিগ্রাম জিংক।
প্রতি হেক্টরে প্রায় ৮ টন ধান পাওয়া যাচ্ছে যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে ৯ টনেরও বেশি উৎপাদন সম্ভব।
পরীক্ষামূলক উৎপাদনে ব্রি ১০২ ধানের ব্যাপক সফলতার পর আগামীতে দেশব্যাপী এই ধানটি উৎপাদনে উৎসাহ দিবে কৃষি মন্ত্রনালয়।
কৃষকদের অধিক লাভবানের মাধ্যমে যেটি বাণিজ্যিক কৃষির সাথে সম্পৃক্ত করবে কৃষকদের। কারণ, বাজারে মোটা ধানের তুলনায় মণে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা বেশি দাম পাওয়া যাবে।
একাত্তর/এসি
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.