গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখানোর চেষ্টা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তার মতে, এর মধ্য দিয়ে ভোটের আসল চিত্র ফুটে উঠেছে। আর, সেটাই বাংলাদেশের আসল চিত্র।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ২৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। নিরপেক্ষ সরকারে অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন করার দাবি জানিয়ে আমীর খসরু কলেন, এর কোন বিকল্প নেই।
গাজীপুর সিটি নির্বাচন ‘সুষ্ঠু দেখানোর চেষ্টা’ হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দেখাতে হবে… চেষ্টা করেছে। ওই চেষ্টার ফলাফলটা আমরা দেখে ফেলেছি।… কী উঠে এসেছে আমরা দেখেছি সবাই। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের আসল চিত্র।
খসরু বলেন, আজকে আমরা রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, পেশাজীবীসহ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করছি। যদি দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা না যায়, মানবাধিকার ফিরিয়ে আনা না যায়, তাহলে গণতন্ত্র ফিরে আসবে না।
তিনি বলেন, আলোচনা পরে, আগে দরকার লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। সে দাবিতেই বিএনপি আন্দোলন করছে। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা না গেলে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র কোনটাই বজায় থাকে না।
সবাইকে বিএনপির আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের পরে এখন আরেকটা আসছে ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা অ্যাক্ট’। আরো আইন আসবে, আরো নিপীড়ন-নির্যাতনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দলবাজদের প্রভাব এত বেশি হয়ে গেছে যে বাংলাদেশে সাধারণ যারা সাংবাদিক রয়েছে, যারা প্রফেশনালি সাংবাদিক রয়েছে, যারা সাংবাদিকতার পেশা হিসেবে নিতে চায় তাদের স্পেস সীমিত হয়ে গেছে। দলবাজরা নির্লজ্জভাবে তৈল মর্দন করতে করতে সাংবাদিকদের বদনাম হচ্ছে।
তিনি বলেন, যারা সাংবাদিকতা করতে আসছেন কতটুকু সাংবাদিকতা করতে পারছেন সেটা আপনাদের থেকে কেউ ভালো জানে না। আজকে সাংবাদিকদের বড় একটি অংশ বিদেশে অবস্থান করছে তারা বাংলাদেশে থাকতে পারছে না। তারা দেশ ছেড়ে চলে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আজকের দুবাই, লন্ডন ও আমেরিকা যেখানেই যান না কেন সাংবাদিকদের দেখা যায়। আবার অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। সুতরাং সাংবাদিকদের যে মানদণ্ড এটা যদি ফিরিয়ে আনতে চান তাহলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
খসরু বলেন, সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া সাংবাদিকদের অবদান ছাড়া গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবাধিকার, আইনের শাসন, জীবনের নিরাপত্তা, বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কোন কিছু অর্জন করা সম্ভব নয়। ডিজিটাল সিকিউরিটির মাধ্যমে সাংবাদিকরা কিভাবে নির্যাতিত হচ্ছে এবং সেন্সরশীপ চালু হচ্ছে। দেশের মানুষের আশা ভরসা তুলে ধরেন সাংবাদিকরা। কিন্তু তারা আজকে কোনো সুযোগ পাচ্ছে না।
এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণমাধ্যমের যতটুকু স্বাধীনতা আছে তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে দমন করছে সরকার। সাগর রুনি হত্যার তদন্ত প্রতিবেদনের মধ্যে এমন কিছু আছে যা প্রকাশ করতে সরকার ভয় পায়।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে গণতন্ত্র জিতেছে: কাদের
সংগঠনের সভাপতি মুরসালিন নোমানীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন বাদশা, আবুল কালাম আজাদ, ইলিয়াস হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম তপুসহ রিপোর্টাস ইউনিটির সদস্যরা।
একাত্তর/এসি
মন্তব্য
এই নিবন্ধটি জন্য কোন মন্তব্য নেই.