২০২০ সালের ৮ মার্চ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের থেকে জানানো হয় বাংলাদেশে তিনজন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। এরপর থেকেই ভাইরাসটির বিস্তার দ্রুত ঘটতে থাকে। রাজধানী থেকে শুরু করে অল্প সময়েই মধ্যেই ছড়িয়ে পরে জেলায় জেলায়।
মহামারীর সঙ্গে মানুষের পরিচয় না থাকায় দিশেহারা হয়ে পরে সবাই।ভীষণ ছোঁয়াচে এই ভাইরাস মোকাবেলায় দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের অভিজ্ঞতাও ছিলো না।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার প্রথম দিকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয় মার্চ মাসের ১৭ তারিখে। ২২ মার্চ, ১০ দিনের যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়, তা পরবর্তীতে সাত দফা বাড়িয়ে ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
দেশজুড়ে ‘লকডাউন’ করার আগ পর্যন্ত আক্রান্ত বাড়ি, প্রয়োজনে জেলা, উপজেলা ইত্যাদি লকডাউন করা হয়। ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ২৯টি জেলা সম্পূর্ণ এবং ১৯টি জেলা আংশিকভাবে লকডাউন করা হয়। ছিলো উম্মুত্ত চলচালের ওপর বিধি নিষেধ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করছেন, অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশ এই এক বছরে করোনা মোকাবেলায় সফলতা দেখিয়েছে। করোনা পরীক্ষার ল্যাব একটি থেকে প্রায় তিনশটিতে উন্নিত হয়েছে। শনাক্তের পরিধি বাড়াতে আরটিপিসিআর এরপর যুক্ত হয়েছে জিন এক্সপার্ট ও এন্টিজেন পদ্ধতি।
চিকিৎসা ও হাসপাতালের সংখ্যাও বেড়েছে। প্রতিটি কোভিড হাসপাতালে সিলিন্ডার অক্সিজেন পদ্ধতি বাতিল করে মিনি ফোল্ড অক্সিজেন পদ্ধতি চালু হয়েছে।
প্রায় ৫ হাজার চিকিৎসক ও সেবিকা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৩ হাজার মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট ও টেকশিয়ান নিয়োগ চুড়ান্ত পর্যায়ে। চিকিৎসায় নতুন প্রযুক্তি যুক্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানান, মহামারীর বিরুদ্ধে সবশেষ লড়াই হিসাবে দেশের সব মানুষকে বিনামূল্যে টিকার আওতায় কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। দক্ষিণ এশিয়ার বহু দেশকে পিছনে ফেলে জুলাই মাসের মধ্যে প্রায় ৪ কোটি টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
আর দেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুরুতে অভিজ্ঞতার অভাবে চিকিৎসা ও সার্বিক ব্যাবস্থায় নানা অসঙ্গতি ও বিভ্রান্তি ছিলো। এখন তা অনেকটাই কাটানো গেছে।
তবে সে সঙ্গে তারা সব মানুষের প্রতি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলেও মাস্ক ব্যবহার ও হাত ধোঁয়াসহ সব ধরণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। না হলে দেশে আবারো করোনা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।