বিএনপির আন্দোলনের হাতিয়ারে মরিচা ধরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেন, বিএনপির কথিত জোয়ার এখন ভাটায় পরিণত হয়েছে।
শনিবার সকালে তাঁর বাসভবনে ব্রিফিং করে এসব মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য উপস্থাপন করেন আর মাঝে মাঝে তাঁর বাকচাতুর্য কল্পনাকেও হার মানায়’।
বিএনপির জনসমর্থনের জোয়ারে নাকি সরকারের হৃদকম্প শুরু হয়েছে, বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এসব সৃজনশীল কথামালার চাতুরীতে ফখরুল ইসলাম আলমগীর আত্মতৃপ্তি বোধ করতে পারেন, কর্মীদের রোষানল থেকে নিজেদের সুরক্ষার জন্য কল্পনার ফানুস ওড়াতে পারেন কিন্তু বাস্তবের সাথে তাদের বক্তব্যে বিপরীত তা দেশের মানুষ ঠিকই জানেন।
তিনি বলেন, পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে ভরাডুবির আশংকা বিএনপিকে আগেই পেয়ে বসেছে। আর তাই তাদেরই হৃদয়ে হৃদকম্পন শুরু হয়েছে। বলেন, আওয়ামী লীগ ভয়ে কাঁপে না, চ্যালেঞ্জ আর লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়াই বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি, আর সেই রাজনীতিই আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করে যাচ্ছে।
এদেশের রাজপথ জানে আওয়ামী লীগের আন্দোলন - সংগ্রামের বীরত্বগাথা আর সমৃদ্ধ ইতিহাস। ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণ জানে বিএনপির হঠকারিতা, গণতন্ত্র হত্যা, ষড়যন্ত্র, লুটপাট আর সুবিধাবাদী রাজনীতির কথা।
শেখ হাসিনা সরকার আর আওয়ামী লীগকে হুমকি ধামকি দিয়ে লাভ নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বরেন, ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের যে অপচেষ্টা করছে বিএনপি তা আমাদের অজানা নেই।
বিএনপির সবকিছুতেই শর্ত এবং মামার বাড়ির আবদার উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার গঠন করলে নাকি তারা নির্বাচনে অংশ নিবেন, আসলে বিএনপি ভালো করেই জানে তত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি একটি মীমাংসিত বিষয়।
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হয়েছে, এ পদ্ধতি ছিলো একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা, দীর্ঘ মেয়াদে তত্বাবধায়ক সরকার চলতে পারে না। দেশের গণতন্ত্র যখন এগিয়ে যায় তখন সরকার ও নির্বাচন ব্যবস্থার উপর আস্থা ফিরতে শুরু করে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, এ প্রতিষ্ঠানের ওপর সরকারের কোন হস্তক্ষেপ নেই। যারা বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে বহুদলীয় তামাশা আর সুবিধাবাদ চালু করেছিলো, যাদের দলের অভ্যন্তরে নেই গণতন্ত্রের চর্চা, আজ তারাই গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলেন।
বলেন, কারা হ্যা-না ভোটের প্রহসন করেছিলো? কারা সেনাপ্রধান পদ থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছিলো? কারা ১৫ ফেব্রুয়ারীর ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছিলো? কারা ১ কোটি ২৭ লাখ ভূয়া ভোটার সৃষ্টি করে জনগণের অধিকার হরণ করতে চেয়েছিলো? এতসব প্রশ্নের জবাব বিএনপি মহাসচিব দিবেন বলে আশা করেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দলীয় মনোনয়ন পেতে আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য আগামী ২ অক্টোবর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়নের আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা প্রদানের তারিখ নির্ধারণ করেছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আগ্রহী প্রার্থীদের ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে থেকে দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা প্রদান করতে হবে।
এছাড়াও, নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে এবং কোন ধরনের লোকসমাগম ছাড়া প্রার্থী নিজে অথবা প্রার্থীর একজন প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা প্রদান করবে।
আবেদনপত্র সংগ্রহের সময় সকল প্রার্থীদের অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সঙ্গে আনতে হবে। আওয়ামী লীগের সর্বপর্যায়ের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কোন মদদ ও প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে হবে।
একাত্তর/ এনএ