সৌমিত্র মজুমদার
সেই ১৯৪৮ সাল থেকেই তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করতো পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁর সব কর্মকাণ্ডের ওপরই চালানো হতো গোয়েন্দা নজরদারি। দেশভাগের এক বছর পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালির ক্ষোভ বাড়ছিলো। তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর গোয়েন্দা নজরদারির শুরু তখন থেকেই।
শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে দেয়া প্রথম গোয়েন্দা রিপোর্ট দেয়া হয় ১৯৪৮ সালের ১৩ জানুয়ারি। ওইদিন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বর্ধমান হাউসে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আই আই চুন্দ্রিগরের উপস্থিতিতে মুসলিম লীগের সভা চলা অবস্থাতেই শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রকাশিত ৩ টাকা মূল্যের পূর্ব পাকিস্তানের দুর্ভাগা জনসাধারণ কৈফিয়ত দিতে হবেঃ আমাদের দাবি শীর্ষক বইটি বিক্রি করা হয়। এরপর ৩ মার্চে ১৯৪৮ দ্বিতীয় গোয়েন্দা প্রতিবেদনে একটি রাজনৈতিক লিফলেট প্রকাশের খবর পাওয়া যায়।
বঙ্গবন্ধু গবেষক মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী এবং মোনায়েম সরকার বলেন, সে সময় থেকেই মুজিবকে নিজেদের জন্য হুমকি মনে করতো পশ্চিম পাকিস্তান। তাই তার প্রতিটি গতি প্রকৃতি ও কর্মকাণ্ডের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি চলতো। তারা জানান, ১৯৪৮ থেকে ১৯৫০ মাত্র এই দুই বছরে ২৮ বছরের তরুণ শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে ৩২১টি গোয়েন্দা প্রতিবেদন দেওয়া হয়। ওই সময়েই তিনি বিপুল জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। এ কারণে তার আটকাদেশের মেয়াদও বেড়েছে দফায় দফায়।
১৪ খণ্ডের এই গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় গোয়েন্দা দলিল ছিলো শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। সেগুলো থেকে ইতিহাসের আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটন হতে পারে বলছেন বিশ্লেষকরা।