শুক্রবার সকালে সরকারি বাসভবন থেকে নিয়মিত ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনার সরকার সকল ধর্মের অনুসারীদের সহাবস্থান এবং নিরাপত্তা বিধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একটি অশুভ মহল বরাবরের মতো দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা করছে। তারা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে ব্যর্থতা ঢাকতে নানান অপকৌশল আর ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সরকার ইতিমধ্যে সুনামগঞ্জের ঘটনায় তদন্তপূর্বক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা অপরাধকে অপরাধ হিসেবেই দেখেন। অতীতের ধারাবাহিকতায় এ ঘটনার সাথে যুক্তদেরও শাস্তি পেতে হবে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে, অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে এবং এ দুঃখজনক ঘটনায় নির্যাতনের শিকার পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশের পাশাপাশি ধৈর্য ধারণেরও আহবান জানান ওবায়দুল কাদের।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকার যখন দল-মত নির্বিশেষে অভিযুক্তদের শাস্তির কথা বলছে তখন বিএনপি নেতারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে আওয়ামী লীগের উপর দোষ চাপিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে চাইছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে তোষণ আর পোষণ করাই বিএনপির রাজনীতি বলে মন্তব্য করেন সরকারের এই মন্ত্রী। বিভিন্ন পরাশ্রয়ী আন্দোলনে ভর করে সরকার পতনের ঘটানোর অলিক স্বপ্ন ভেস্তে গেছে বিএনপি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর আগেও তারা ধর্মীয় অনুভূতিতে উস্কানি দিয়ে ভাস্কর্যবিরোধী আন্দোলন করতে চেয়েছিল যা হালে পানি পায় নি। তথাকথিত আন্দোলনে বিন্দুমাত্র সাড়া না পেয়ে অতীতের মত সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ভোঁতা অস্ত্র কাজে লাগানোর অপচেষ্টা করছে বিএনপি বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের স্পষ্ট ভাষায় বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তির ঐক্যবদ্ধতায় শেখ হাসিনা সরকার এদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী বর্ণচোরা অপশক্তিকে আর কখনো মাথা তুলতে দিবেনা। আওয়ামী লীগের আমলে সংখ্যালঘু নির্যাতন বেড়ে যায়, - বিএনপি নেতাদের এমন কাল্পনিক অভিযোগ ও মিথ্যাচার চৈত্রের দাবদাহে আষাঢ়ে গল্প ছাড়া আর কিছু নয় বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদেরের।
তিনি বলেন, ২০০১ পরবর্তী ঘটনাবলি তদন্তে উচ্চ আদালতের নির্দেশে পরবর্তীতে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করা হয়েছিল। কমিশন নির্যাতনের ৫ হাজার ৫ শত ৭১টি সুস্পষ্ট অভিযোগ পায়, প্রকৃত চিত্র ছিলো তার চেয়েও ভয়াবহ। বিচারতো দুরে থাক- হামলা, সন্ত্রাস, লুটতরাজের অভিযোগ পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা করতে পারেনি তখন। তিনি দুঃখ করে বলেন, আজ তারা সম্প্রতির কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে! স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়ে ও উস্কানী দিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরোধী তাদের অবস্থানকে স্পষ্ট করেছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। শেখ হাসিনা সরকার এর পেছনের কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন করেব বলেও জানান তিনি।
এদেশের সনাতন ধর্মের অনুসারীদের আত্মার আত্মীয় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার সবসময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশে রয়েছে।
২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। কর্মসূচী অনুযায়ি ২৬শে মার্চ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সকাল ৭.৩০ মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল ৮.৩০ মিনিটে ঐতিহাসিক ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। এবং ২৮ মার্চ সকাল ১১ টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন বলে জানান তিনি