বিএনপি'র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। দীর্ঘদিন যাবত তিনি কিডনি ও ফুসফুসের বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন।
১৮ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে মওদুদ আহমদের মরদেহ দেশে পৌঁছালে বিএনপির সিনিয়র নেতারা বিমানবন্দরে তা গ্রহণ করেন। এরপর কিছুক্ষণ তাঁর মরদেহ গুলশানের বাসভবনে রাখার পর রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের হিমঘরে নেয়া হয়।
শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মরদেহ নেয়া হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্ত্রী হাসনা মওদুদ। পল্লীকবি জসীম উদদীনের জামাতা মওদুদ আহমদের কফিনে এসময় শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি'র কেন্দ্রীয় ও সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, অঙ্গ ও সহযোগী নেতৃবৃন্দ, গনস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডি'র বেলায়েত হোসেন, গণফোরামের মোশতাক আহমেদ, জাগপার খোন্দকার লুতফর রহমান, ন্যাপের গোলাম মোস্তফাসহ বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এরপর মওদুদ আহমদের মরদেহ নেয়া হয় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে। প্রবীণ আইনজীবী ও সাবেক আইনমন্ত্রীর জানাজায় সেখানে অংশগ্রহণ করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতিগণ, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নাল আবদীন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ আইন অঙ্গনে মওদুদ আহমদের দীর্ঘ কর্মজীবনের সহকর্মীরা।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে মরদেহ নেয়া হয় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। যে দল প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন সেই দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা ফুলেল শুভেচ্ছায় শেষ বিদায় জানান তাঁকে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় পতাকায় মওদুদের কফিন ঢেকে দেন। সেখানে অনুষ্ঠিত জানাজায় অনেকের মধ্যে আরও ছিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান প্রমুখ। এছাড়া ২০ দলীয় জোট জামায়াতে ইসলামী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, মুসলিম লীগসহ অন্যান্য দলের নেতৃবৃন্দ মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পল্টনে জানাজার পর হেলিকপ্টারে করে মওদুদ আহমদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর নিজ জেলা নোয়াখালীতে। জুমার নামাজের পর কবিরহাট ডিগ্রী কলেজ মাঠে তৃতীয় দফায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সহ হাজার হাজার সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বাদ আছর আরও দুইটি জানাজা শেষে কোম্পানিগঞ্জে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে দাফন করা হবে দেশের এই বর্ষীয়ান রাজনীতিককে।