দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মুহাম্মদ কাদের বলেছেন, দেশের রিজার্ভ প্রতিদিনই নিম্নগামী হচ্ছে। রিজার্ভের অবস্থা খুবই খারাপ। ধীরে ধীরে বাংলাদেশ ডেঞ্জার জোনে এগিয়ে যাচ্ছে।
রোববার বিকেলে জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি আরও অভিযোগ করেন, সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে দেশে একনায়কতন্ত্র চলছে।
রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিউটিটে জাতীয় পার্টির স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে যোগ দিয়ে জি এম কাদের বলেন, বড় প্রকল্পগুলো থেকে আয় দেখাতে না পারলে ঋণ শোধ করা কঠিন হবে। সরকার সবই জানে বোঝে, কিন্তু এখনো কোনো সতর্ক ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
তিনি বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে বড় বড় প্রকল্পের ঋণের টাকা পাচার হচ্ছে। দেশে জবাবদিহিতা নেই। সরকার তথ্য গোপন করে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা খারাপ। তবে বাংলাদেশের পণ্যমূল্য বেড়েছে বেশি।
নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষ আস্থা রাখতে পারছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থাকে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করতে হবে। যে সরকার দেশের সাধারণ মানুষকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে, তাদেরকেই মানুষ বেছে নেবে নির্বাচনের মাধ্যমে।
জিএম কাদের বলেন, মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও, সব সরকারই ক্ষমতায় গিয়ে একনায়কতন্ত্র চালু করেছে। এর পরিবর্তন ঘটাতে হবে। এসময় একটি নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির ভেতর থেকে দেশের রাজনীতিতে থাকতে চান বলে জানান জাপা চেয়ারম্যান।
এর আগে দুপুরে বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে ময়মনসিংহ জেলা জাপা, সব উপজেলা এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় জি এম কাদের বলেন, আমরা দেশের মানুষের পক্ষে কথা বলি, আমরা দেশের মঙ্গলের জন্য রাজনীতি করি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের রাজনীতি দেখে অনেকেই মনে করছেন, আমরা অন্য কারো সঙ্গে হাত মিলিয়েছি। আমরা আসলে জাপার রাজনীতি করছি। কারো সঙ্গে নাকে খত দিয়ে রাজনীতি করব না। কারো দালালি করতে জাপার রাজনীতি নয়।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, বড় গাছের ছায়াতলে থাকলে ছোট গাছ, বেড়ে উঠতে পারে না। বড় গাছের ছায়াতলে না থাকলে ঝড়-ঝঞ্ঝা আসে, তা মোকাবিলা করেই দাঁড়াতে হয়। জাপা কারো ছায়াতলে যাবে না। তাই, ঝড়-ঝঞ্ঝা আসবে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই দল গড়ে তুলব।
আরও পড়ুন: আমান ছাড়া ‘১০ ডিসেম্বর’ বিএনপির অন্য কেউ দেখছেন না!
তিনি আরও বলেন, আমরা শুরু থেকেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোটের বিরোধিতা করছি। জাপা মনে করে, ইভিএমে কারচুপির সুযোগ আছে। ইভিএমে কারচুপি করে ফলাফল ঘোষণা হলে, চ্যালেঞ্জ করা যায় না।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের কেউ কেউ মনে করছেন, একটি দল নির্বাচনে কারচুপি করে বিজয়ী হয়ে শর্টকাট পদ্ধতিতে তাদের মন্ত্রী-এমপি করবেন। এটা যারা মনে করেন তারা জাপার জন্য জীবাণু। তাদের জাপা থেকে চলে যেতে হবে অথবা সংশোধন হতে হবে।
একাত্তর/এসি