ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এ ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এ সময় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে শেখ হাসিনা সরকার আছে এবং থাকবে।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংকালে এ আহবান জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি এমন একটি দল যাদের নেতাদের মুখে মধু অন্তরে বিষ। তাদের মুখে গণতন্ত্রের বুলি কিন্তু চর্চায় লুটপাট আর সুবিধাবাদ।
বিএনপি স্বাধীনতার কথা বলে কিন্তু লালন ও পোষণ করে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি আর পৃষ্ঠপোষকতা করে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি ভোটাধিকারের কথা বলে অথচ ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন আর সোয়া এককোটির বেশি ভুয়া ভোটার সৃষ্টি করেছিলো। তাই তাদের মুখে মুখে কথামালার মধু ছড়ালেও অন্তরে বিধ্বংসী বিষবাষ্প।
আওয়ামী লীগ তত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিলো, বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্য বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন হ্যাঁ করেছিলো, আর তা হচ্ছে মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভাতের অধিকারের জন্য, কিন্তু বিএনপি তো তখন তত্বাবধায়ক সরকারের বিরোধিতা করেছিলো।
বিএনপি নেত্রী তখন বলেছিলেন শিশু আর পাগল ছাড়া নিরপেক্ষ কেউ নন, কিন্তু বিএনপি নেতারা এখন একথা কেন বলে না- এ প্রশ্নও করেন ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন: ১১ প্রাণ কেড়ে নিলো ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং
তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করেছে বিএনপি, এমন দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন তাদের কেন এ পশ্চাদযাত্রা, আসলে বিএনপি ভবিষ্যৎমুখী নয়,তারা পশ্চাদমুখী।
তিনি আরও বলেন, অন্ধ বিরোধিতাই বিএনপির একমাত্র হাতিয়ার।
বিএনপির টেকব্যাক মানে আবারও বিদ্যুৎবিহীন খাম্বা, তাদের টেকব্যাক মানে আবারও গ্রেনেড হামলার মতো ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের টেকব্যাক হচ্ছে আগুন সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির আস্ফালন।
বিএনপির টেকব্যাক মানে আবারও হাওয়া ভবন, খোয়াব ভবন এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ টেকব্যাকের নামে আর সেই অন্ধকারে ফিরে যাবে না।
বিএনপি নেতারা বিদ্যুৎ এবং রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে কোন মুখে? তাদের কি বিন্দুমাত্র লাজশরম নেই? এতসব প্রশ্ন রেখে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, যারা দেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছিলো, যাদের শাসনামলে দিনের পর দিন লোডশেডিং চলতো, ঘন্টার পর বিদ্যুৎ থাকতো না, তারা আজ বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে কোন মুখে?
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের স্মরণ করে দিয়ে বলেন, বিদ্যুতের নামে খাম্বা দিয়ে প্রতারণার কথা জনগণ এখনো ভুলে যায়নি, ভুলে যায়নি বিদ্যুতের দাবিতে মিছিলে গুলির কথা, হারিকেন-কুপি নিয়ে বিক্ষোভের কথা এবং বিদ্যুৎ ভবন ঘেরাও করার কথা।
দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার কোন ঘাটতি নেই, ঘাটতি হচ্ছে জ্বালানি সংকট নিয়ে, আর এই সংকট শুধু বাংলাদেশে নয়, এ সংকট বিশ্বব্যাপী উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন এই সংকট আগে তো ছিলো না, সরকার দেশে শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছিল- তবে জ্বালানির সংকট সমাধানে এখনো সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা রয়েছে।
আরও পড়ুন: শক্তি হারিয়ে সিত্রাং এখন দুর্বল স্থল নিম্নচাপ
বিএনপি নেতারা বিশ্ব পরিস্থিতি অনুধাবন না করে শুধু সরকারের অন্ধ সমালোচনায় ব্যস্ত। তারা রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, চার বিলিয়নের কিছু বেশি ছিলো বিএনপির আমলে রিজার্ভের পরিমাণ, আর শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ দেখেছে দেশবাসী। বর্তমানে যা প্রায় ৩৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার।
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে আরও বলেন, তাদের সময়ে রেখে যাওয়া চার বিলিয়নের কিছু বেশি রিজার্ভের সাথে এখনকার রিজার্ভের সংখ্যাটা মিলিয়ে নিন। তারপর না হয় রিজার্ভ নিয়ে কথা বলুন।
একাত্তর/আরবিএস