সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন নতুন কুতুব সৃষ্টি হয়েছে যারা দেশকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যেতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় দলটির শীর্ষ নেতারা বলেন, সংকট সমাধানের একমাত্র পথ নির্বাচন। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের দিন তারিখ ঘোষণার আহবানও জানান বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। 'শহীদ জিয়ার ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধের সূচনা' শিরোনামে আয়োজিত এই সভায় বক্তব্য রাখেন দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
কেন্দ্রীয় নেতারা স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্বের পাশাপাশি আলোচনায় আনেন দেশের বর্তমান পরিস্থিতি। সংকট এখনও কাটেনি মন্তব্য করে, সংস্কারের উছিলায় নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই বলছেন তারা। এতে করে সুযোগ পাবে পতিত স্বৈরাচার ও তাদের দোসররা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রতিটি মুক্তির আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলো বিএনপি, ভুক্তভোগীও বেশি বিএনপি।
এবারেও স্বৈরাচার পতনের পর গণতন্ত্র উত্তরণের পথ বাধাগ্রস্ত হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাসিনা যেভাবে প্রকল্প করে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিলো সেরকম নতুন কোনো প্রকল্পের জন্ম হয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন জনমনে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি যাতে ক্ষমতায় না আসে সেই চেষ্টায় ব্যস্ত একটি গোষ্ঠী, তবে মানুষ ভোটের জন্য অপেক্ষায়, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির অপেক্ষায়।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফের হোসেন বলেন, নির্বাচনই সব সমস্যার একমাত্র সমাধান, অন্তর্বর্তী সরকার ওয়াদা করছিলো জনগণের অধিকার ফেরত দিবে।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের কথা বলে উছিলা সৃষ্টি করে জাতীয় নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা হচ্ছে, পাশাপাশি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে।
নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তবে এটি বুঝতে হবে স্বৈরাচাররা বসে নেই; দিন তারিখ ঘোষণা হলে মানুষ নির্বাচনমুখী হবে যখন কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব জানান, হঠাৎ করেই বিপ্লব হয়নি, এর ভিত্তি তৈরি করেছে বিএনপিই। কেউ কেউ নতুন করে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, সংস্কার কোনো নতুন জিনিস নয়, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের পাহাড় নিয়ে এসেছে যার অনেক কিছু মানুষ বুঝতেও পারছে না। মানুষের কাছে যেটি গ্রহণযোগ্য সেটি করা দরকার। নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই যার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পথে যাবে দেশ।
সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে তবে এটি আমরা হতে দিতে পারি না, উল্লেখ করে দেশের সম্ভাবনা যেন নষ্ট না হয় সেজন্য দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহবান জানান মির্জা ফখরুল।
৭১ এর নৃশংস ঘটনায় পাকিস্তানিরা এখনও ক্ষমা চায়নি, তাদেরই সহযোগীরা এখন কীভাবে গলা ফুলিয়ে কথা বলে সে প্রশ্নও তোলেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।