রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
তার নাম হৃদয় মিয়াজি (২৩)। তিনি কুমিল্লার তিতাস উপজেলার দূরলব্দী গ্রামের বাসিন্দা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম সদস্য সচিব।
সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের মনাইরকান্দি গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি পারভেজ হত্যায় এজাহারভুক্ত পাঁচ নম্বর আসামি।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) এ তথ্য জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) এ কেএম মঈন উদ্দিন।
তিনি জানান, বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর র্যাব বনানী থানায় হৃদয় মিয়াজিকে হস্তান্তর করেছে।
এর আগে রোববার (২১ এপ্রিল) রাতে এ নিয়ে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ টাওয়ারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন হয়। এতে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা পারভেজ হত্যায় সংগঠনের নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টার দাবিকে অস্বীকার করেন।
বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছাত্রদল পরিকল্পিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা শুরু করেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের ন্যায্য দাবি ও গণঅভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্মকে কলঙ্কিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে ছাত্রদল।
তার আগে একই দিন দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম অভিযোগ করেন, পারভেজকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা জড়িত।
ওই দিন মধ্যরাতে ঢাকার মহাখালী ওয়ারলেস গেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে পারভেজ হত্যায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করে বনানী থানা পুলিশ।
তারা হলেন- মো. আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) ও আল আমিন সানি (১৯)।
তবে তারা কেউ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন, মামলার এজাহারেও তাদের নাম নেই। ইতিমধ্যে তারা সাত দিনের পুলিশি রিমান্ডে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ হাসাহাসিকে কেন্দ্র করে জাহিদুল ইসলামকে হত্যার অভিযোগ ওঠে।
জাহিদুল বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। ২২ বছর বয়সী এই শিক্ষার্থীর বাড়ি ময়মনসিংহে।
এ হত্যার ঘটনায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন- মেহরাজ ইসলাম (২০), আবুজর গিফারী পিয়াস (২০), মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজি (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদের মধ্যে এজাহারে সোবহান নিয়াজ তুষারের পরিচয় দেওয়া হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে। হৃদয় মিয়াজির পরিচয় দেওয়া হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একই ইউনিটের যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে।
ছাত্রদলের ভাষ্য, জাহিদুল ইসলাম তাদের সংগঠনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছেন।