কোহিনূর কণা
পঙ্গুত্ব যেনো এক অভিশাপ। দুরন্ত জীবনটাকে এক মুহুর্তেই ঠেলে দেয় নিকষ কালো অন্ধকারে। স্পোর্টস ওয়ার্ল্ডে আছে এমন কিছু অ্যাথলেট যারা সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে গেছেন। বিশ্ব পঙ্গু দিবসে সামনে আনা হয়েছে এমনই কিছু তারকাকে।
ফিবুইলার হিমেলিয়াকে সঙ্গী করে পৃথিবীতে আসে এমি মিউলিনস। জন্মের এক বছরের মাথায় কেটে বাদ দিতে হয় দুটি পা। জন্মই যেনো আজন্ম এক পাপ। তবে খেলাধুলা আর শোবিজের প্রতি এমির ইচ্ছা শক্তির কাছে হেরে যায় পাহাড়সম বাধা। ট্র্যাক এন্ড ফিল্ডে এমিই প্রথম পঙ্গু প্রতিযোগী যিনি ১৯৯৬ সালে প্যারা অলিম্পিকে তিনটি ইভেন্টে গড়েন বিশ্ব রেকর্ড। এখানেই শেষ নয়! খেলা ছেড়ে পরবর্তীতে সবাইকে তাক লাগিয়ে এমি হয়ে উঠেন ফ্যাশন আইকন।
বেথানি হ্যামিল্টনের গল্পের শুরুটা সার্ফিংয়ের স্বর্গরাজ্য হাওয়াই দ্বীপে। সমুদ্রের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঢেউয়ের সাথে লড়াই করাই যার নেশা। বিশাল বিশাল ঢেউগুলোকে অনায়াসে হারিয়ে দেয়া বেথানির জীবনে হঠাৎই নেমে আসে ঘোর অমানিশা। ১৫ ফুট উচ্চতার টাইগার শার্কের কাছে হার মানে ১৩ বছর বয়সের এই ছোট্ট মেয়েটা। তবে বেথানি যেন স্বপের কারিগর। অন্ধকার ঠেলে, এক হাতেই লেখেন ইতিহাস। জায়গা করে নেন প্রফেশনাল হল অব ফেইমে। শুধু তাই নয় সেলুলয়েডের পর্দাতেও নিজের ছাপ রাখেন অদম্য সাহসিকতা ও অফুরন্ত আত্মবিশ্বাসী এই আমেরিকান।
বাস্কেটবল, সকার, রাগবি, বেসবল কী খেলেননি টেরি ফক্স । তবে দুঃস্বপ্নের মতো খেলা পাগল এই মানুষটার শরীরে বাসা বাধে ক্যান্সার। বিসর্জন দিতে হয় একটি পা। এমন ভাগ্য যেন আর কাউকে কখনো বরণ করতে না হয় তাইতো নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেন এই কানাডিয়ান। ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ছুটে বেড়ান এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কৃত্রিম পা নিয়ে ম্যারাথনে যোগ দিয়ে ১৪৫ দিনে পাড়ি দেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার মাইল।
মাইক সালটজ স্নোমোবাইল দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে নিজেই বানিয়ে ফেলেন কৃত্রিম পা। নিজের পায়ে ভর করে একের পর এক শিরোপা জিতেন মটোক্রস গেইমসে।
পৃথিবীতে এমন হাজারো পরাজিত না হবার গল্প রয়েছে। তাই হতাশার কোন সুযোগ নেই। শারীরিক অক্ষমতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে স্বপ্নকে করতে হবে মুঠোবন্দী।