প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। মোহাম্মদ নবীদের এমন উড়ন্ত সূচনা দেখে অনেকটাই শঙ্কায় বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকরা। এমনকি বাংলাদেশকে আফগানদের চেয়ে সহজ প্রতিপক্ষ বলেই দাবি করেছে লঙ্কানরা। যদিও, আফগান স্পিনার রশিদ খান বাংলাদেশকে সহজ প্রতিপক্ষ বলায় বিস্মিতিই হয়েছেন।
তবে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ বলে দিয়েছেন, কে বড়, কে ছোট কিংবা কে ভালো, কে খারাপ- সবই প্রমাণ হবে মাঠে। অবশেষে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সেই লড়াইয়ের ক্ষণ প্রস্তুত।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মোহাম্মদ নবির সঙ্গে টস করতে নেমে জয় হলো বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানেরই এবং টস জিতেই প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
এরপর এশিয়া কাপের নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানদের স্পিন বিষে নীল হয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৮ ওভার তিন বলে ১৩১ রান করে আফগানিস্তান। ফলে ৭ উইকেটে জয় হয় রশিদদের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান ১৮.৩ ওভারে ১৩১/৩
বাংলাদেশ ২০ ওভারে ১২৭/৭
নাজিবুল্লাহ ঝড়ে উড়ে গেল বাংলাদেশ
মোসাদ্দেক হোসেনকে টেনে ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। আফগানিস্তানের জন্য ‘পারফেক্ট’ শেষ!
মোহাম্মদ নবি যখন ফেরেন, ৪২ বলে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৬৬ রান। ম্যাচে তখন ফেভারিট ছিল বাংলাদেশই। তবে চিত্রটা বদলে দিলেন দুই জাদরান–নাজিবুল্লাহ ও ইব্রাহিম। বিশেষ করে নাজিবুল্লাহ। মাত্র ১৭ বলে ৪৩ রান করে অপরাজিত থাকলেন তিনি। ইব্রাহিমের সঙ্গে তার জুটি অবিচ্ছিন্ন ছিল ৩৩ বলে ৬৯ রানে।
শারজায় বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সবার আগে সুপার ফোর নিশ্চিত করল আফগানিস্তান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি এখন বাঁচামরার দুই দলের জন্যই। সে ম্যাচে জয়ী দল গ্রুপ ‘বি’ থেকে আফগানদের সঙ্গী হবে সুপার ফোরে।
আফগানদের ১০০
শেষ দিকে যাকে নিয়ে ছিল সবচেয়ে বড় শঙ্কা, সেই নাজিবউল্লাহ জাদরানই ভোগাতে শুরু করেছেন বাংলাদেশকে। পেশির জোর আর টাইমিংয়ের দারুণ মিশেলে দ্রুত বাড়াচ্ছেন রান। সপ্তদশ ওভারে মুস্তাফিজের বলে তার দুটি ছক্কায় দলের রান স্পর্শ করেছে শতরান।
মুস্তাফিজের এই ওভার থেকে রান এসেছে ১৭।
শেষ ৩ ওভারে আফগানদের প্রয়োজন ২৬ রান।
মেহেদীকে নাজিবুল্লাহর ছয়
আগের ওভারে দুই চার মেরেছিলেন ইব্রাহিম জাদরান, এবার মেহেদীকে ছয় মারলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। মেহেদী ৪ ওভার শেষ করলেন। মোস্তাফিজের ২ ওভারের সঙ্গে সাইফউদ্দিনের বাকি ৩ ওভার, মোসাদ্দেকের ২টি, তাসকিনের ১টি। ২৪ বলে দরকার ৪৩ রান।
তাসকিনের ওভারে দুই চার
প্রথমে পয়েন্ট, পরে টেনে কাভার দিয়ে তাসকিনকে দুটি চার মারলেন ইব্রাহিম জাদরান। ১১তম ওভারে তাসকিনের বলেই এর আগের বাউন্ডারি এসেছিল আফগানিস্তানের।
৩০ বলে আফগানিস্তানের প্রয়োজন ৫১ রান, বাকি ৭ উইকেট।
ফিরেই সফল সাইফউদ্দিন
গত বছর শারজায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল সাইফউদ্দিনের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। চোটের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে ফিরলেন আজ, ওই ভেন্যুতেই। প্রথম ওভারেই এরপর সফল হলেন বাংলাদেশ পেসার। নীচু হওয়া বলে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে এলবিডব্লু মোহাম্মদ নবি। রিভিউ না করেই ফিরে গেছেন আফগান অধিনায়ক, ৯ বলে ৮ রান করে।
আফগানিস্তানকে আরেকবার চাপে ফেলল বাংলাদেশ, শেষ ৪২ বলে প্রয়োজন ৬৬ রান।
সাকিব: ৪-০-১৩-১
প্রথম ওভারেই এসেছিলেন, প্রথম ব্রেকথ্রুও দেন তিনিই। ১২তম ওভারে বোলিং শেষ করলেন সাকিব আল হাসান। টি-টোয়েন্টিতে ফেরার ম্যাচে ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, নিয়েছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজের উইকেট।
জাজাইকে ফেরালেন মোসাদ্দেক
এ পিচে আড়াআড়ি শট—যেন নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনা। সর্বশেষ সেটি করলেন হজরতউল্লাহ জাজাই। মোসাদ্দেক হোসেনকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে এলবিডব্লু তিনি। রিভিউ নিয়েছিলেন, তবে উইকেটে হয়েছে আম্পায়ার্স কল। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেকথ্রু এনে দিলেন মোসাদ্দেক, ৪৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারাল আফগানিস্তান।
এর আগে নিজের প্রথম ওভারে তাসকিন দিয়েছিলেন ৬ রান, মোসাদ্দেক ২ রান। এরপর মোস্তাফিজকে ফেরান সাকিব। ফিজের বিপক্ষে সতর্কই ছিলেন জাজাই ও জাদরান, অন্তত প্রথম চার বলে। পঞ্চম বলে কাটারকে পাত্তা দেননি জাজাই, কাভার দিয়ে টেনে মেরেছেন চার।
অবশ্য পরের ওভারে মোসাদ্দেকের ওপর চড়াও হতে গিয়ে ফিরতে হলো তাকে, ২৬ বলে ২৩ রান করে।
নিয়ন্ত্রিত পাওয়ার প্লে
আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে ৮৩ রান তুলেছিল আফগানিস্তান। সেই দলকে এবার ধীরগতির ও নিচু বাউন্সের উইকেটে ঝড় তুলতে দেয়নি বাংলাদেশ। ৬ ওভারে আফগানরা তুলেছে ১ উইকেটে ২৯।
এই রানটুকুও হতে পেরেছে ষষ্ঠ ওভারে দুই বাউন্ডারিসহ ১০ রান আসায়।
সাকিব ৩ ওভার বোলিং করে ১০ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট।
গুরবাজ স্টাম্পড মুশফিক বোল্ড সাকিব
টানা তৃতীয় ওভার করতে এসে গুরবাজকে ফেরালেন সাকিব। নিচু হওয়া বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন আগের ওভারেই জীবন পাওয়া গুরবাজ। তবে বলের নাগাল পাননি। উইকেটের পেছনে ভুল করেননি মুশফিক, গুরবাজ স্টাম্পড হয়ে ফিরেছেন ১৮ বলে ১১ রান করে।
পঞ্চম ওভারে প্রথম ব্রেকথ্রু বাংলাদেশের, সেটিও অধিনায়কের বোলিংয়ে।
সুযোগ হারাল বাংলাদেশ
আগ্রাসী রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ হারাল বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের বলে সহজ ক্যাচ ছাড়লেন মাহমুদউল্লাহ।
ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে উড়িয়ে মারেন গুরবাজ। সাকিব তা বুঝেই খাটো করে দেন লেংথ। তাতে ক্যাচ উঠে যায় লং অনে। ফিল্ডার মাহমুদউল্লাহ ছুটে এসে বলের নীচে গিয়ে বল হাতেও পান। কিন্তু নিচু হওয়া বল ফসকে যায় তার মুঠো থেকে।
৬ রানে জীবন পেলেন গুরবাজ।
সাকিবের প্রথম ওভারে ২ রান
প্রথম ওভারেই এসেছেন সাকিব আল হাসান। হজরতউল্লাহ জাজাই ও রহমানউল্লাহ গুরবাজকে হাত খোলার সুযোগ দেননি। শেষ বলে আফিরের সরাসরি থ্রোয়ে তৈরি হয়েছিল রানআউটের সম্ভাবনা। তবে জাজাই ক্রিজে ব্যাট ঢোকাতে পেরেছেন সময়মতোই। প্রথম ওভারে বাংলাদেশ অধিনায়ক দিয়েছেন ২ রান।
অন্য প্রান্তে এসেছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
১২৭ রানে মাত্র দুইবার জিতেছে বাংলাদেশ
১২৭ বা এর কম রান ডিফেন্ড করে বাংলাদেশ এর আগে জিতেছে মাত্র দুইবার। দুটিই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, গত বছর বিশ্বকাপের আগে। যদিও মিরপুরের ওই সিরিজের উইকেট ছিল স্পিন সহায়ক।
আফগানিস্তানের লক্ষ্য ১২৮
নতুন কোনো আবিস্কারের প্রয়োজন পড়েনি, চেনা ‘অস্ত্র’ দিয়েই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ঘায়েল করল আফগানিস্তান। রশিদ খান, মুজিব-উর-রহমান, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কাছে নামগুলো খুবই পরিচিত। আফগানিস্তানের স্পিন বোলিংয়ের পুরোধা তারা।
বেশ কয়েক বছর ধরেই আফগানিস্তানের বোলিং বিভাগের উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে আলো ছড়াচ্ছেন এই দুইজন। যাদের বোলিং সামলানোর উপায় খুঁজতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নেটে কাটিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা, তাদের স্পিন বিষেই নাকাল হয়েছেন। এশিয়া কাপের নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানদের স্পিন বিষে নীল হয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ।
জয়ের জন্য মোহাম্মদ নবীদের প্রয়োজন ১২৮।
বাংলাদেশকে ১২৭ পর্যন্ত নিয়ে গেলেন মোসাদ্দেক
প্রথম ছয়জন ব্যাটসম্যানের পাঁচজনই ব্যাটিং করেছেন ১০০-এর নিচে স্ট্রাইক রেটে, একজনের স্ট্রাইক রেট ১২২.২২। সাতে নামা মোসাদ্দেক হোসেন সেখানেই খেললেন ৩১ বলে ৪৮ রানের ইনিংস, ১৫৪.৮৩ স্ট্রাইক রেটে। ফিফটি পাননি, তবে মোসাদ্দেকের ওই ইনিংসে ভর করেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে ১২৭ রান।
শারজার ধীরগতির নিচু বাউন্সের উইকেটে শুরু থেকেই আফগান ঘূর্ণিতে ভুগেছে বাংলাদেশ। মুজিব ও রশিদের ৮ ওভারে উঠেছে মাত্র ৩৮ রান, বাংলাদেশ হারিয়েছে ৬ উইকেট।
শেষ ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে পাঠান নবি, ওই ওভারে উঠেছে ৭ রান।
বাংলাদেশের একশ
মোসাদ্দেক হোসেন উইকেটে যাওয়ার পর একটু গতি পেয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। দারুণ কিছু শট খেলে এগিয়ে চলেছেন তিনি। ফজলহক ফারুকির বলে তার বাউন্ডারিতে দলের রান ১০০ স্পর্শ করল ১৬.২ ওভারে।
৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ
এতক্ষণ রশিদের ওপর সে অর্থে চড়াও হননি বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ স্লগ করতে গিয়ে ধরা পড়লেন। মিডউইকেটে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২৭ বলে ২৫ রান করেছেন সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ক। মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে জুটিতে উঠেছে ৩১ বলে ৩৬ রান।
এ ওভারেই স্টাম্পিং থেকে সূক্ষ্ণ ব্যবধানে বেঁচে গেছেন মোসাদ্দেক।
রশিদের শেষ বলে বাউন্ডারি পেয়েছেন মোসাদ্দেক। আফগান লেগ স্পিনার বোলিং শেষ করলেন ৪ ওভারে ২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে। ফলে রশিদ ও মুজিব—৮ ওভারে মাত্র ৩৮ রান দিয়ে নিলেন ৬ উইকেট।
গ্যালারিতে বাংলাদেশের দাপট
প্রতিটি সিঙ্গেলও দর্শকদের ভাসাচ্ছে উল্লাসে, অন্তত তাদের আওয়াজ বলছে সেটিই। শারজার গ্যালারিতে বাংলাদেশের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতোই, যদিও মাঠের পারফরম্যান্স এখনো খুব একটা সুবিধার নয়।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এতো কম রানে আগে কখনো ৫ উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ
মোসাদ্দেক হোসেন ও মাহমুদউল্লাহর জুটিতে এখন পর্যন্ত উঠেছে ১৯ রান। দুজনের ষষ্ঠ উইকেট জুটি শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের স্কোর ৫৩ রান থাকতে। এর আগে কখনোই আফগানিস্তানের বিপক্ষে এত কম রানে ৫ উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ।
রশিদের কবলে আফিফ
আফগান স্পিনের কোনো জবাব দিতে পারছে না বাংলাদেশ। সর্বশেষ রশিদ খানের শিকার আফিফ হোসেন। সোজা হওয়া বলটি পেছনে গিয়ে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে গেছেন আফিফ। আম্পায়ারের এলবিডব্লুর সিদ্ধান্ত রিভিউ করেছিলেন, তবে কাজে আসেনি সেটি। আফিফ ফিরে গেলেন ১৫ বলে ১২ রান করে।
দ্বিতীয় ওভারে দ্বিতীয় উইকেট নিলেন রশিদ। শারজায় বাংলাদেশের দুর্দশা বাড়ল আরেকটু।
দশ ওভারে বাংলাদেশের ৫০
পঞ্চম ওভারে পর পর দুই বলে দুই চার মেরেছিলেন সাকিব। পরের বাউন্ডারিটি এলো দশম ওভারের পঞ্চম বলে। নবির লেগ সাইডের বলে ব্যাট চালিয়ে সেটি পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
দশম ওভারে ইনিংসে তৃতীয় স্পিনার হিসেবে এসেছেন আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। আফিফ রিভার্স সুইপ করেছিলেন, বাউন্ডারিও পেয়ে যেতে পারতেন। তবে সীমানায় দারুণ ফিল্ডিং করে সেটি বাঁচিয়েছেন ইব্রাহিম জাদরান।
নবির প্রথম ওভারে এসেছে ১২ রান। ১০ ওভার শেষে ৫০ রান বাংলাদেশের।
মুজিবের ২০০
এনামুলের উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে ক্রিকেটে ২০০ উইকেট পূর্ণ হলো মুজিব উর রহমানের। ২১ বছর ২৫৫ দিন বয়সে এই মাইলফলক ছুঁয়ে তিনি দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ। ২০ বছর ১৫ দিনে ২০০ ছুঁয়ে সর্বকনিষ্ঠ রশিদ খান।
সপ্তম ওভারে চতুর্থ উইকেট হারালো বাংলাদেশ
এক প্রান্তে মুজিব, অন্য প্রান্তে রশিদ। প্রথম ওভারে বোলিং করতে এসেই রশিদ ফেরালেন মুশফিকুর রহিমকে। আরেকটি এলবিডব্লুর আবেদন, আরেকটি আফগানিস্তান রিভিউ। সফলও হলো সেটি। ডিফেন্ড করতে যাওয়া মুশফিকের ব্যাটের ইনসাইড এজ ফাঁকি দিয়ে রশিদের গুগলি লাগে প্যাডে, আম্পায়ার আবেদনে সাড়া না দিলেও বল ট্র্যাকিং পক্ষে গেছে আফগানদের। সপ্তম ওভারেই চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
মুজিবের তৃতীয় শিকার সাকিব, চাপে বাংলাদেশ
নভিন উল হকের আগের ওভারে পরপর দুই বলে দুই চার মেরেছিলেন সাকিব। তবে পরের ওভারে মুজিবকে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনলেন তিনি। লাইন মিস করে গেছেন বাংলাদেশ অধিনায়কও, হারিয়েছেন স্টাম্প। তৃতীয় ওভার করতে এসে তৃতীয় উইকেট মুজিবের, চাপে বাংলাদেশ।
৪ ওভারে ১৩ রান তুলতে ২ উইকেট হারালো বাংলাদেশ
নীচু হয়ে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে গিয়েছিলেন এনামুল হক, আম্পায়ার আসিফ ইয়াকুব অবশ্য আউট দেননি। মুজিব উৎসাহী ছিলেন শুরু থেকেই, তবে নবী রিভিউ নেন একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে। সফলও হলো আফগানিস্তান। বল ব্যাটে লাগেনি, বল ট্র্যাকিংয়ে দেখিয়েছে তিন লাল। মুজিবের ২ ওভারে ফিরলেন দুই ওপেনার, এনামুল ফিরলেন ১৪ বলে মাত্র ৫ রান করে। ৪ ওভারে ১৩ রান তুলতে ২ উইকেট হারাল বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারালো বাংলাদেশ
দ্বিতীয় ওভারে এসেছিলেন মুজিব উর রহমান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে দিয়েছিলেন নাঈম, স্ট্রাইক ফিরে পান শেষ বলে। সেটিতেই ফিরতে হলো তাঁকে। মুজিবের বল থেমে থেমে আসছিল, ভেতরের দিকে ঢোকা বলটিতে ব্যাট চালিয়ে নাগাল পাননি তিনি। ব্যাট ও প্যাডের মাঝে বি-শা-ল ফাঁক রেখে খেলতে গিয়ে মিস করে হয়েছেন বোল্ড। দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ, স্কোরবোর্ডে রান ৭।
ফারুকির প্রথম ওভারে ৫
প্রথম দুটি বল গুডলেংথ ও ব্যাক অব আ লেংথে করার পর ফুললেংথে যেতে চেয়েছিলেন ফজলহক ফারুকি, তবে সেটি হয় লো ফুলটস। মিড অনকে বিট করে সেটিতে চার মেরেছেন নাঈম। পরে অবশ্য লেংথ আবার ঠিকঠাক করেছেন ফারুকি, নাঈম দুটি ডট খেলার পর শেষ বলে নিয়েছেন সিঙ্গেল।
বাংলাদেশ ১ ওভারে ৫/০।
টসের সিদ্ধান্তে চমক
টসজয়ী দল আগে বোলিং নেবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। পিচ রিপোর্টে ধারাভাষ্যকার রাসে আর্নল্ডও বলছিলেন, টস জিতলে আগে বোলিং করা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান টস জিতে আগে নিলেন ব্যাটিং।
টসে হেড কল করেছিলেন আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী। কিন্তু ফলাফলে পরাজিত হন তিনি।
ধারণা করা হচ্ছে স্কোর বোর্ডের চাপে আফগানিস্তানকে রাখতে চান বলে এমন সিদ্ধান্ত তার।
শুভসূচনা আফগানিস্তানের
নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮ উইকেটের দাপুটে জয় তুলে নিয়ে শুভসূচনা করে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে আজকের ম্যাচে আফগানিস্তানকেই ফেবারিট মানছেন অনেকে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের উইনিং কম্বিনেশন ভাঙেনি আফগানিস্তান, অপরিবর্তিত দল নিয়েই নামছে তারা।
আফগানিস্তান একাদশ রয়েছেন যারা:
রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহীম জাদরান, হজরতউল্লাহ জাজাই, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবী (অধিনায়ক), করিম জানাত, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, রশিদ খান, ফজলহক ফারুকি, নভিন উল হক, মুজিব উর রহমান।
অপরদিকে বাংলাদেশ দলে সাকিবের সঙ্গে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ নাঈম। সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফরে বিশ্রামে ছিলেন মুশফিক। নাঈম প্রাথমিকভাবে এশিয়া কাপের দলে না থাকলেও সুযোগ পান নুরুল হাসান ছিটকে যাওয়াতে। এনামুল হকের সঙ্গে ওপেনার হিসেবে আজ একাদশে আছেন তিনি।
চোট কাটিয়ে ফেরা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও আছেন দলে।
বাংলাদেশ একাদশ রয়েছেন যারা:
সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), এনামুল হক, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মোহাম্মদ নাঈম, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ।
সাকিবের একশ
২০১৭ সালের এই দিনে সাকিব আল হাসানের ৫০তম টেস্ট শেষ হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে স্মরণীয় এক জয়ে অসাধারণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার। ৫ বছর পর ঠিক এই দিনে সাকিব খেলতে নামছেন তার শততম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি।
বাংলাদেশের হয়ে এই মাইলফলকে পা রাখতে পেরেছেন কেবল আর দু’জন। এই ম্যাচের আগে মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন ১১৯ ম্যাচ, মুশফিকুর রহিম ১০০টি। বিশ্ব ক্রিকেটে সাকিবের আগে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সেঞ্চুরি হয়েছে আর ১৪ জনের।
একাত্তর/আরএ