নাটোরে অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে ব্যাহত হচ্ছে চলন বিলের পানি প্রবাহ। কৃষকদের অভিযোগ, বিলের মধ্যে অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা ও ভবন নির্মাণের সময় পানি সরার বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
যে কারণে কোথাও জলাবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে, আবার কোথাও সৃষ্টি হচ্ছে সেচ সংকট। এতে একদিকে যেমন চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অন্যদিকে ঝুঁকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য।
দেশের উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম জলাভূমি চলনবিল। হাজার মাইলের বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে এক সময়ে বছরের সব সময়ই থাকত পানির প্রবাহ। পানি প্রবাহের কারণে বিস্তীর্ণ এ বিলকে বলা হতো চলন্ত বিল।
পরবর্তীতে যা চলন বিল নামে পরিচিতি পায়। যুগে যুগে নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ধীরে ধীরে ছোট হয়ে চলন বিল হারিয়ে ফেলছে তার চিরাচরিত বৈশিষ্ট্য। এখন শুধু বর্ষায় বিস্তীর্ণ বিলে পানির প্রবাহ দেখা যায় না।
উত্তরাঞ্চলের কৃষি বৈচিত্র্যের অন্যতম কেন্দ্র এই চলন বিল। সম্প্রতি এর শেরকোল এলাকায় নির্মাণ হচ্ছে হাইটেক পার্কসহ চারটি বড় প্রতিষ্ঠান।
কৃষকদের অভিযোগ, এসব অবকাঠামো নির্মাণের সময় পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়নি। যে কারণে এমন উন্নয়ন তাদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।
পানি সরার ব্যবস্থা না থাকায় শেরকোল চলনবিলের চকপুর, তেলিগ্রাম, সিধাখালী, ভাঙ্গারকান্দিসহ প্রায় ২০টি গ্রামের প্রায় ২ হাজার বিঘা জমি এখন জলাবদ্ধ। যে কারণে সেই জমি চাষ করার সময়, শ্যাওলা ও আগাছা পরিষ্কার করতে প্রতিবিঘা খরচ হয় ৫-৭হাজার টাকা। যে কারণে উৎপাদন খরচ বাড়ে প্রায় দ্বিগুণ এলাকার লোকজন অভিযোগ করেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সামনে একটি করে অপ্রয়োজনীয় ব্রিজ নির্মাণ করে রাষ্ট্রের টাকাও অপচয় হয়েছে।
এদিকে পানি প্রবাহ এবং জীব বৈচিত্র্যের কোন সমস্যা না হয় সেটি গুরুত্ব দিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
বিশেষজ্ঞদের মতে ৩২টি নদী, ৯৩টি বিল ও শতাধিক ক্যানেলের সমন্বয়ে চলনবিলের প্রবাহ। তবে কালের বিবর্তনে দখল দূষণে বেশিরভাগ জলধারা হারিয়ে গেছে।