এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল নিয়ে রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এবার আনন্দ উচ্ছ্বাসের মাত্রা ছিলো অনেকটাই কম। ফল ঘোষণার পরই কলেজগুলোর ক্যাম্পাসে বাড়তে থাকে ফল প্রত্যাশীদের ভিড়। সফলতার আনন্দ উদযাপনে অংশ নিয়েছেন শিক্ষক আর অভিভাবকরাও।
তবে তারা জানিয়েছেন, ফল প্রকাশের পর এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ। পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির পরীক্ষাকেই এবার মূল্যায়নের আসল লড়াই দেখছেন উচ্চমাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থীরা। এরজন্য দ্রুতই প্রস্তুতি নেয়ার তাগাদাও দেখা গেছে অনেকের মধ্যে।
সবে স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে উচ্চ শিক্ষার পথে যাত্রা শুরুর প্রথম ধাপটা পেরুলো শিক্ষার্থীরা। তাই যেন উচ্ছ্বাসটাও একটু বেশি। যদিও এই উচ্ছ্বাস অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম। কারণ দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এবার কিছুটা ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ঘোষিত হলো এই ফলাফল।
তাই প্রত্যাশার চাপ আর উৎকণ্ঠা ছিলো বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর মনে। তবে কাঙ্ক্ষিত ফল পেয়ে খুশী শিক্ষার্থীরা। ঘরে বসে ওয়েবসাইট বা মোবাইলেই ফল জেনেছে অনেক শিক্ষার্থী। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও উপস্থিতি ছিলো কিছুটা কম। তারপরও নোটিশবোর্ডের রেজাল্ট সিট দেখার উত্তেজনা ছিলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে বেশিরভাগ বিষয়ের ফল দেয়ায় যে শিক্ষার্থীরা এসএসসিতে ভালো ফল করতে পেরেছিলো তারা এইচএসসিতেও ভালো করেছে। তবে এসএসসিতে অপেক্ষাকৃত ভালো করতে না পারলেও এইচএসসিতে কঠোর পরিশ্রম করা শিক্ষার্থীদের অপ্রাপ্তির অনুভূতি রয়েই গেছে।
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে বেলা ১১টার দিকে সাঁটিয়ে দেয়া হয় পরীক্ষার ফল। শুরুতে কয়েকজন শিক্ষার্থী থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এসেছেন অভিভাবকরাও। ড্রামের তালে তালে হইচই করে উল্লাস প্রকাশ করেন তারা।
জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে এবার মাঝপথেই শেষ হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা। আবার সব বোর্ডে সমান সংখ্যক পরীক্ষাও হয়নি। যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা হয়নি সেগুলোর ফল মূল্যায়ন করা হয়েছে এসএসসি'র ফলাফলের ভিত্তিতে। যা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
শিক্ষার্থীরা বলেছেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পরীক্ষা না হওয়ায় তাদের জন্য ভালো হয়েছে। তবে এক বিবেচনায় পরীক্ষা হলে ভালো হতো। কারণ ভর্তি পরীক্ষার জন্য তখন রসায়ন বা গণিতের মত বিষয়গুলোতে নিজেদের আত্মবিশ্বাসকে যাচাই করে নিতে পারতেন।
সাবজেক্ট ম্যাপিং নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, এটা একটি বিতর্কিত বিষয়। অনেকে পরীক্ষা দিতে চেয়েছেন। অনেকে চাননি। তবে একটা কথা হল যা হয় ভালোর জন্যই হয়। কেউ অটোপাস বললে তা সঠিক হবে না কারণ আমরা সাতটি পরীক্ষা দিয়েছি, সেগুলোতে ফুলমার্ক অ্যান্সার করেছি।
সবগুলো পরীক্ষা না হওয়া আর সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফল প্রকাশের ব্যতিক্রমী ঘটনার পর এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকেই শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের আসল লড়াই বলে মনে করছেন সবাই।