বিগত ১৬ বছর কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী লীগের শাসনামলে অন্যতম বহুল চর্চিত শব্দের নাম ছিলো আয়নাঘর। বিভিন্ন বাহিনীর আওতায় থাকা এসব গোপন বন্দিশালায় রেখে নির্যাতন করা হতো বিরোধী মতের ব্যক্তিদের। বাদ যাননি জুলাই আন্দোলনের নেতারা। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আয়নাঘর দেখতে গিয়ে সেসব চিনতেও পেরেছেন দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিরোধী মতের বহু মানুষকে বিচারবহির্ভূতভাবে আটক করে অজ্ঞাত স্থানে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিলো। এসব অজ্ঞাত বন্দিশালার প্রতীকী নাম দেয়া হয়- আয়নাঘর। বিভিন্ন বাহিনীর তৈরি আয়না ঘরের খোঁজ পাওয়ার কথা জানায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম তদন্ত কমিশন। এই কমিশনের আহ্বানেই বুধবার এসব স্থাপনা পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস।
এ সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর- ডিজিএফআই-এর আয়নাঘর চিনতে পারার কথা জানিয়েছেন জুলাই আন্দোলনের দুই জনপ্রিয় মুখ নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আয়নাঘর পরিদর্শনের পর তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তাকে যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল সেই কক্ষের একপাশে টয়লেট হিসেবে একটি বেসিনের মতো ছিলো।
তিনি বলেন, তাকে যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিলো সেই কক্ষের এক পাশে টয়লেট হিসেবে একটি বেসিনের মতো ছিলো। ৫ আগস্টের পর এই সেলগুলোর মাঝের দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়, দেয়াল রং করা হয়। আর, আসিফ ভূঁইয়া জানান, তাকে যে কক্ষে আটকে রাখা হয়েছিল সেই কক্ষের দেয়ালের উপরের অংশের খোপগুলোতে এগজস্ট ফ্যান ছিল, এখন নেই।
অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আয়নাঘর দেখে আসার পর, এনিয়ে নিজের রোম লোমহর্ষক স্মৃতি সামনে এনেছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরীও। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় একটি বিদ্যালয়ের উদ্বোধনীতে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি বলেন, যে আয়নাঘরে তাকে এক মাস আটকে রাখা হয়েছিলো, সেটি দেখেছেন তিনি। সেখানে নির্যাতনের বর্ণনাও দিয়েছেন তিনি।
আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আইয়ামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠা করে গেছে আওয়ামী লীগ সরকার। যারা এমন অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের সবার বিচার করা হবে।