রাজধানীর চানখারপুলে শিক্ষার্থী আনাসসহ ছয় জনকে হত্যার ঘটনায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এর মধ্য দিয়ে জুলাই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ কোনো প্রতিবেদন দাখিল হলো। এই ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর।
সোমবার (২১ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
পাঁচ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবারও পরও সাভার আশুলিয়া যাত্রাবাড়ি ও চানখারপুলের মতো বিভিন্ন এলাকায় চলছিলে, পতিত সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ।
সেদিন মাকে চিঠি লিখে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শহীদ শাহরিয়ার খান আনাস। চিঠিতে তিনি লেখেন, প্রজন্মের জন্য বহু মানুষ জীবন বিসর্জন দিচ্ছে, তাই মৃত্যুর ভয় করে স্বার্থপরের মতো ঘরে বসে না থেকে গুলি খেয়ে বীরের মতো মৃত্যুকে বরণ করে নেওয়াই ভালো।
এরপর, পাঁচ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের কয়েক ঘণ্টা আগে চানখাঁরপুলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন আনাস। একটি বুলেট তার বুকের বাম পাশ দিয়ে ঢুকে পিঠ ভেদ করে বেরিয়ে যায়। একই দিন পুলিশের গুলিতে চানখারপুলে শহীদ হন জুনায়েদ, ইয়াকুব, রাকিব, ইসমামুল, মানিক মিয়া।
ছয় মাস ১৩ দিনের তদন্ত শেষ সোমবার জুলাই গণহত্যার প্রথম কোনো মামলার রিপোর্ট দাখিল করলো তদন্ত সংস্থা।
এ সময় চিফ প্রসিকিউটর জানান, ১৯ টি ভিডিও , ৭৯ জনের জবানবন্দি, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের গুলির নির্দেশ দেওয়া সংক্রান্ত অডিও, সব আলামত বিশ্লেষণ করে চানখারপুলে আট জনের অপরাধের প্রমাণ মিলেছে।
তিনি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ঊর্ধ্বতন অনেকের বিরুদ্ধেই অপরাধে প্রমাণ মিলেছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা থাকায় প্রতিবেদনে এসব সাক্ষ্য প্রমাণ যুক্ত হবে।
চানখারপুলের এ মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পুলিশের চার কর্মকর্তা পলাতক রয়েছেন। তাদের অবস্থান নিশ্চিত নয় তদন্ত সংস্থা। তবে শিগগিরই অভিযোগ দাখিলের মাধ্যমে তাদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হবে।