দীর্ঘ বিরতির পর আবারও খাল উদ্ধারে নেমেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। বুধবার সকালে মোহাম্মদপুর বসিলার হাইক্কার খাল উদ্ধারে ভেঙে ফেলা হয়েছে একটি দোতলা ভবন। উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলছেন, দখলদারদের ঘুম হারাম করে দেবেন তিনি। পর্যায়ক্রমে উত্তর সিটির সব খাল উদ্ধারেই অভিযান চালাবে ডিএনসিসি। এখন থেকে অভিযানের আগে দখলদারদের কোনো নোটিশও দেয়া হবে না।
এদিন রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার হাইক্কার (কাটাসুর) খালের জায়গা দখল করে নির্মিত দোতলা একটি ভবনের পুরোটা এবং তিনতলা একটি ভবনের আংশিক গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি টিনের পাঁচটি ঘর ভেঙে দেওয়া হয়। এই ভবন ও ঘরগুলো বাসাবাড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
সকাল ১০টার দিকে হাইক্কার খাল পাড়ে এই অভিযানে নামে উত্তর সিটি কর্পোরেশন। ভবনটির মালপত্র সরিয়ে নিতে দেয়া হয় পর্যাপ্ত সময়। বাড়ি মালিকের অভিযোগ এক প্রভাবশালীর কাছে তিনি জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়াতেই এই অভিযান।
বেলা ১২ টার দিকে বাড়ির মালপত্র সরানো হলে আবারও শুরু হয় ভবন ভাঙার কাজ। খাল দখল করে গড়ে উঠা বাড়িটি এক্সেভেটর দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে অভিযান শেষ হয়।
ঢাকা উত্তর সিটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দোতলা ভবনের পুরোটাই খালের জায়গা দখল করে বানানো হয়েছিল। আর তিনতলা ভবনটির প্রায় ২০ ফুট অংশ খালের জায়গায় ছিল। ভেঙে ফেলা টিনের ঘরগুলো দোতলা ভবনের দুই পাশে খালের জায়গার মধ্যে ছিল।
কর্মকর্তারা আরও জানান, অভিযানে খালের জায়গা দখল করে তৈরি স্থানীয় একটি মসজিদের শৌচাগার ও সীমানা দেয়াল ভাঙা হয়েছে। মসজিদের যেটুকু অংশ খালের মধ্যে পড়েছে সেটিও ভাঙা হবে।
অভিযানে উপস্থিত থাকা ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ধর্মীয়, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং এক সময় বঙ্গবন্ধুর নামে ক্লাব করেই ঢাকার খাল, জলাধার ও পাবলিক প্লেসগুলো দখল করা হয়েছে। সরকারি খাল-বিল দখল করে নাকে তেল দিয়ে ঘুমানোর সময় শেষ। দখল করা জায়গাটা ছেড়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, অবৈধ দখলদারদের কোনো নোটিশ দেওয়া হবে না, সরাসরি উচ্ছেদ করা হবে।
ডিএনসিসির এই খাল দখল করেই গড়ে উঠেছে একটি মসজিদ। সেটি এলাকাবাসীকে নিজ উদ্যোগে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে সিটি করপোরেশন।
ডিএনসিসি প্রশাসক আরও বলেন, খালের জায়গা দখল করে থাকা বাড়ি ৩ তলা হোক আর ১০ তলা হোক, সব ভেঙে দেওয়া হবে। হাইক্কার খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শেষে খাল খনন করে রায়েরবাজার কবরস্থানের দেয়াল ভেঙে লাউতলা খালের সঙ্গে সংযোগ করে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতির বিষয়ে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তাঁরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছেন। মঙ্গলবারও ডিএনসিসি এলাকার সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ও প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সভা হয়েছে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় মশকনিধন কার্যক্রম চলছে। মশার ওষুধ ঠিকমতো ছিটানোর কাজটি তদারকির জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়ার পরিকল্পনা আছে।