পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাহাড়ে জুম্ম জাতি গোষ্ঠী নিরাপদ জীবন ও সংস্কৃতি কৃষ্টি রক্ষায় প্রতিকূল পরিবেশ বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।
তিনি বলেন, নানাবিধ প্রতিকূল পরিবেশে পার্বত্য অঞ্চলের জুম্ম জাতিগোষ্ঠীকে অস্বস্তিকর জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে।
সোমবার (১০ এপ্রিল) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসক-বিষু-বিহু উপলক্ষে রাঙ্গামাটি শহরে বর্ণাঢ্য র্যালির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সন্তু লারমা বলেন, পাহাড়ের বসবাসরত জাতিগোষ্ঠীর মানুষ তাদের নিজস্ব ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন ধারণ করতে চায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী জুম্ম সংস্কৃতি তথা জীবন ধারা সংরক্ষণ ও বিকশিত করতে চাইলে অধিকারের কথা ভাবতে হবে। আমাদের অধিকারকে সমুন্নত রেখে জীবনধারাকে উজ্জীবিত ও সংরক্ষণ করতে হবে।
তিনি জুম্মদের সংস্কৃতি সংরক্ষণ, বিকাশ ও অধিকার নিশ্চিতের লক্ষে পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের আন্দোলন জোরদার করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিহু, বিষু ও সাংক্রান উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রতিকৃতি রঞ্জন চাকমার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য শ্রী সাধুরাম ত্রিপুরা, শিক্ষাবিদ অঞ্জলিকা খীসা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী লেখক ফোরামের সাবেক সভাপতি শিশির চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেওর্য়াকের সহ সভাপতি অ্যাড. ভবতোষ দেওয়ান, বিজু, সংগ্রাই, বৈসু, বিষু, সাংক্রান, বিহু উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ইন্টু মনি চাকমা প্রমুখ।
এর আগে সকালে পৌর প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বেলুন উড়িয়ে উৎসবের সূচনা করেন সন্তু লারমা। র্যালিতে পাহাড়ি নারী-পুরুষ ঐতিহ্যবাহী পোশাকে শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
আরও পড়ুন: বাড়িতে বোমা রেখে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি
পরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে চাকমা, ত্রিপুরা, মারমা, তংচঙ্গ্যা, পাংখোয়া, অহমিয়া, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসহ অন্য সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষের অংশগ্রহণে পৌর প্রাঙ্গণ থেকে বের করা হয় বর্ণাঢ্য র্যালি। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, আগামী ১২ এপ্রিল থেকে তিন দিন ব্যাপী পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসতরত ১৪টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-সাংক্রান উৎসব শুরু হচ্ছে।
একাত্তর/এসি