যৌথবাহিনীর অভিযানের কারণে বান্দরবানের রুমা ও থানচির বম পাড়া এখনও জনশূন্য। এরইমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে ব্যাংক ডাকাতির ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ছবি। সেই সিসি ক্যামেরার ফুটেজে লুটের রোমহর্ষক দৃশ্য ধরা পড়েছে। ছবি দেখে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে, আটক ১৮জন নারীসহ মোট ৫৬জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে বান্দরবানের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলার পর তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন।
থানচির ব্যাংকে ডাকাতির ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ছবিতে দেখা যায়, কেএনএফ-এর প্রায় সব সদস্য মুখে খালি মেখে ব্যাংকে আক্রমণ করে। তাদের হাতে একনালা বন্দুক ও বেশ কটি আধুনিক স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। ব্যাংক কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের পাশাপাশি ব্যাংকে আসা দুজন নিরস্ত্র বিজিবি সদস্যকেও তারা জিম্মি করে।
ব্যাংকগুলোর সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে এই চিত্র পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা যায়, তাদের পরনে বিশেষ পোশাক। মুখে কালি মাখা। হাতে অস্ত্র। কারও কারও মাথায় টুপি। কাঁধে ব্যাগ। পায়ে বুট জুতা। ২ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রথমে রুমার একটি ব্যাংকে হানা দেয় অস্ত্রধারীরা।
রুমায় হামলার পরদিন ৩ এপ্রিল থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে হানা দিয়ে অস্ত্রধারীরা। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নেয়া ছবিতে দেখা যায়, ডাকাতির সময় সিঁড়ি বেয়ে সশস্ত্র কেউ দোতলায় উঠছে। আর কেউ সতর্ক পাহারায় রয়েছে। আর কেউ কেউ ব্যাংকের ভেতরে কর্মকর্তাদের টেবিলের সামনে অবস্থান করছে।
ব্যাংকের ভেতরে ঢুকে গ্রাহকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে সন্ত্রাসীরা। পরে তাদের হাত ওপরে তুলে বসে পড়তে বলে। বাধ্য হয়ে সবাই তাদের আদেশ মানে। এর মাঝেই চলে তাদের কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার কাজ। ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে যেসব টাকা ছিল তার সবই নিয়ে নেয় অস্ত্রধারীরা।
রুমায় রাতের আক্রমণের ছবিতে তাদের চেহারা স্পষ্ট না থাকলেও কর্মকান্ডগুলো পরিস্কার। ছবি বিশ্লেষন করে দুস্কৃতিকারিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের ধারণা, ব্যাংক লুটের ঘটনায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) শতাধিক সদস্য অংশ নিয়েছি।
এদিকে গেল দুদিনের অভিযানে বান্দরবানের বম পাড়াগুলো প্রায় জনশূন্য। বম জাতি গোষ্ঠির নেতা লালজার বম জানান, শান্তির জন্য তাদের উদ্যোগ ভেস্তে দিয়েছে কেএনএফ এর উগ্র সদস্যরা। বান্দরবানের রাস্তায় চলছে সাঁজোয়া যানের টহল। এখন পর্যন্ত মামলা হয়েছে ১৮টি।
কেএনএফ এর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দমনে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যহত রাখার ঘোষনা দিয়েছে আইনশৃংখলা বাহিনী। কেএনএফ আলোচনায় আগ্রহী হলে সেটিও চলবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সমন্বিত অভিযান চলছে। অভিযান সমন্বয় করছে সেনাবাহিনী।