ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসেওয়েতে পদ্মাসেতু হয়ে চলাচলকারী যানবাহন দুর্ঘটনার কবলে পড়লে আহতরা যেন তাৎক্ষনিক সেবা পেতে পারে সেই জন্য মাদারীপুরের শিবচরে নির্মাণ করা হয় ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এর নির্মাণে ১২ কোটি টাকা ব্যয় করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
২০২২ সালের আট নভেম্বর এর উদ্বোধন করেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী।
হাসপাতালটিতে সাত জন পরামর্শক চিকিৎসক, তিন জন অর্থপেডিক সার্জন, দুই জন অ্যানেসথেটিস্ট, দুই জন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাসহ ১৪ জন চিকিৎসক, ১০ জন নার্স, ফার্মাসিস্ট, রেডিওগ্রাফার, টেকনিশিয়ানসহ ৩৪টি পদ সৃজনের কথা থাকলেও এখনও এটি অন্তসারশূন্য। এমনকি এখনও নিয়োগ দেওয়া হয়নি কোনো কর্মচারী। এমন অবস্থায় দুই বার চুরির কবলে পড়েছে হাসপাতালটি।
মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে জন্ম হওয়া প্রতিষ্ঠানটি যখন নিজেই রুগ্ন, তখন হঠাৎ করেই এলো আশার বাণী।
শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বরিশাল যাওয়ার পথে মাদারীপুরের শিবচরে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টারটি আকস্মিক পরিদর্শন করেন।
হাসপাতালটি সম্পর্কে ওয়াকিবহলা এই আমলা বলেন, এক মাসের মধ্যে ট্রমা সেন্টারটিতে জনবল নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালু করা হবে। এই সময়ের মধ্যে পুরোপুরিভাবে চালু করা না গেলেও আংশিকভাবে হলেও অবশ্যই চালু করা হবে।
এসময় স্বাস্থ্য সচিব জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও প্রায় ১৭টি ট্রমা সেন্টার রয়েছে। সেগুলোর সবই ধীরে ধীরে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার উপযোগী করে তোলা হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জনবল সঙ্কট এখনও আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা জনবল নিয়োগ দিচ্ছি। এই সমস্যা আর থাকবে না। তবে অগ্রাধিকার থাকবে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টারটিতে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহা-পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহা-পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. মুনীর আহমেদ খান, শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ মোল্লা, শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. মো. সেলিম মিয়া, শিবচরের ইউএনও আবদুল্লাহ আল মামুন, ভাইস চেয়ারম্যান ফাহিমা আক্তার, শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাতিমা মাহজাবীন, শিবচর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়শা সিদ্দিকা প্রমুখ।
এমন অবস্থায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের প্রায় দেড় বছর পরও হাসপাতালটিতে চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হয় নাই। দীর্ঘদিন যাবৎ ট্রমা সেন্টারটি অরক্ষিত অবস্থায় অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে থাকছে। এতে প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান মালমাল চুরি হয়ে যাচ্ছে।